পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দিল্লি থেকে ফেরা ওই গৃহবধূ ও তাঁর ছেলেকে দু-দু’টি এলাকা থেকে বিতাড়িত করায় রাতভর দু’জনকে কাটাতে হয়েছে শ্মশানে। কোন এলাকায় তাঁরা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন, এই টানাপোড়েনে প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর পুলিসের হস্তক্ষেপে মা ও ছেলের ঠাঁই হল বাড়িতে। হাওড়া জেলার রাজাপুর থানার বুড়িরবাঁধ এলাকা এই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মহুয়া মুখোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লির বাসিন্দা। বছর চারেক আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি ছেলেকে নিয়ে দিল্লিতে থাকলেও সম্প্রতি বাপেরবাড়িতে ফিরে আসার মনস্থির করেন। শুক্রবার বিকেলে মহুয়াদেবী ছেলেকে নিয়ে বুড়িরবাঁধ এলাকায় বাপের বাড়িতে ওঠেন।
তাঁদের থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে, এই আশঙ্কায় এলাকার লোক তাঁদের বাড়িতে থাকতে বাধা দেয়। মা ও ছেলেকে তারা তাঁর বাবারই অন্য বাড়ি, কাছেই পাঁচলা থানার সাহাপুরে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। স্থানীয়দের ক্রমাগত চাপে ভয় পেয়ে রাত ৯টা নাগাদ মহুয়াদেবী তাঁর ছেলেকে নিয়ে সেখানে চলে যান। কিন্তু একই আতঙ্কে সেখানকার লোকেরাও তাঁদের ঢুকতে বাধা দেয় এবং বুড়িরবাঁধেই ফিরে যেতে বলে। একপ্রকার জোর করে তারা তাঁদের বেরও করে দেয়।
শেষে বাধ্য হয়ে তিনি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সাহাপুর লাগোয়া পূর্ব বাসুদেবপুরের একটি শ্মশানে আশ্রয় নেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাবা ও ভাই। শনিবার সকালে পূর্ব বাসুদেবপুর শ্মশানে গিয়ে দেখা গেল, মা ও ছেলে বাক্সপ্যাঁটরা নিয়ে বসে আছেন। এলাকায় প্রচুর লোকজন চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে জটলা করে আছে। মহুয়াদেবী বলেন, বুড়িরবাঁধ ও সাহাপুরে তাঁর বাবার দু’টি বাড়ি থাকলেও এলাকার মানুষ কোথাও তাঁদের থাকতে দেয়নি। বাধ্য হয়ে তাঁকে শ্মশানে রাত কাটাতে হয়েছে। শনিবার সকালে স্থানীয় কুলাই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা করে এলাকায় ঢুকতে গেলেও তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী বিষয়টি নিয়ে পাঁচলা থানায় অভিযোগ জানালেও প্রথমে পুলিস ব্যবস্থা নেয়নি। পরে হইচই শুরু হওয়ায় শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ রাজাপুর থানার পুলিস পৌঁছে মা ও ছেলেকে বুড়িরবাঁধে নিয়ে যায়। যদিও সেখানে প্রথমে এলাকাবাসীর প্রবল বাধায় পুলিসকে পিছিয়ে আসতে হয়। পরে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে মা ও ছেলেকে তারা ঘরে ঢোকাতে সক্ষম হয়। এই ঘরেই রাতে থাকতে হয় মা ও ছেলেকে।-নিজস্ব চিত্র