পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
ঘটনা ১: ৮১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল, করোনা আক্রান্ত একটি পরিবারের জনৈক সদস্য দিব্যি ঘুরে ঘুরে বাজার করছেন। তাঁকে কিছু বলার জো নেই। বলতে গেলেই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ছেন প্রশ্নকর্তার সঙ্গে।
ঘটনা ২: সংক্রামিত এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে ফোন করে পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিচ্ছে পুরসভা। কোনও বাড়ি, আবাসন বা বস্তিতে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেলে, সেখানে দিনে দু’বেলা ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। অভিজাত আবাসন-গুলিতে ফোন করলে সেভাবে সাড়া মিলছে না। উল্টে জুটছে দুর্ব্যবহার। সম্প্রতি আলিপুরের এমনই এক আবাসনে একটি পরিবারে ফোন করে খোঁজখবর নিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই পরিবারের এক সদস্য তাঁর ক্ষমতাবলে রাজ্য সরকারের শীর্ষ মহলে অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, পুরসভা ‘জ্বালাতন’ করছে। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে আর ফোন করার সাহস দেখাননি কেউ।
ঘটনা ৩: ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে আবার অমানবিকতার ছবি ফুটে উঠেছে। বালিগঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের পরিচারক-পরিচারিকারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমণ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে তাঁদের পার্ক প্যালেসের একটি ফ্ল্যাটে আইসোলেশন করেছে ওই পরিবার। রাতের অন্ধকারে তাঁদের ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়, পাছে কেউ দেখতে না পায়। ওই আবাসনের লোকজনের বক্তব্য, করোনা রোগীদের আমাদের ঘাড়ে এনে বসিয়ে দেওয়ার অর্থ কী? তাঁরা স্থানীয় থানায় এনিয়ে অভিযোগও করেছেন।
শহরজুড়ে প্রায় সর্বত্রই কমবেশি এমনই অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হচ্ছে পুরকর্মীদের। টালিগঞ্জ এলাকার এক ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের কথায়, শিক্ষিত মানুষের একটা অংশ উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে। করোনা হলেও অর্থবলে বাড়িতেই চিকিৎসা করাচ্ছেন তাঁরা। পুর-কর্মীরা গেলেও তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উত্তর কলকাতার এক ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের কথায়, আমার এলাকায় একটি অভিজাত আবাসনে পুরকর্মীরা জীবাণুনাশক স্প্রে করতে গেলে বাসিন্দাদের সঙ্গে ঝামেলা হয়। এমনকী, শেষ পর্যন্ত ওই পুরকর্মীদের আবাসনের ভিতরে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। স্প্রে না করেই ফিরে আসতে হয় তাঁগের।
উচ্চবিত্তের বাস এই সব আবাসনে সচেতনতার বার্তা দেওয়া লিফলেট বিলি করেই থেমে থাকতে হচ্ছে পুরসভাকে। প্রয়োজনীয় ওষুধ বিলি, বাসিন্দাদের নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া সহ মাইক্রো প্ল্যানিংয়ের যাবতীয় কাজ করতে হচ্ছে আবাসন চৌহদ্দির বাইরে থেকে। সমস্যার স্বীকার করে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, পুরকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের কথার আদান-প্রদানে হয়তো কোনও সমস্যা হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন আবাসনে বিশেষ করে অতি সংক্রামিত এলাকার বহুতলে লিফলেট বিলির ব্যবস্থা করেছি।