নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আড়াই মাসের শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে মা সন্ধ্যা মালুর বিরুদ্ধে অবশেষে আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিস। শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (এসিজেএম) আদালতে ওই চার্জশিট জমা পড়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (হত্যা) এবং ২০১(সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাট) ধারায় ওই চার্জশিট পেশ করা হয় সন্ধ্যার বিরুদ্ধে। বর্তমানে ওই অভিযুক্ত জেল হেফাজতে আছেন। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে ফের শিয়ালদহ আদালতে হাজির করা হবে। মুখ্য সরকারি আইনজীবী বুধবার জানান, শীঘ্রই ওই চার্জশিটের প্রতিলিপি ধরানো হবে অভিযুক্তকে। এদিন সরকারি আইনজীবী জানান, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি বেলেঘাটা থানার সিআইটি রোডের একটি অভিজাত আবাসনে ওই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সন্ধ্যা মালু তাঁর আড়াই মাসের  শিশুকন্যাকে গলা টিপে খুন করে মৃতদেহ বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে ঢুকিয়ে দেন। প্রথমে ওই মহিলা পুলিসে অভিযোগ করেন, এক ব্যক্তি ফ্ল্যাটে ঢুকে তাঁকে মারধর করে তাঁর শিশুসন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস ওই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ না পাওয়ায়, ওই মহিলাকে লাগাতার জেরা শুরু করলে একসময় তিনি ভেঙে পড়েন। তিনি পুলিসকে জানান, শিশু সন্তানকে তিনি নিজেই খুন করে বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। পুলিস ওই  শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে তা ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় এনআরএসে। সরকারি আইনজীবী জানান, এই শিশু সন্তানটি কার, তা নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিসের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা ও তাঁর স্বামীর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যার স্বামী ওই ডিএনএ পরীক্ষা থেকে বেঁকে বসেন। তিনি পুলিসকে জানান, শিশু সন্তানটি তাঁদেরই। তাই ডিএনএ পরীক্ষা করতে তিনি রাজি নন। ফলে তা বাতিল হয়ে যায়। সমস্ত তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে পুলিস সন্ধ্যার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে এই চার্জশিট পেশ করেছে। পুলিস জানায়, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মামলাটি বিচারের জন্য নিম্ন আদালত থেকে দায়রা আদালতে পাঠানো হবে। সরকারি আইনজীবী বলেন, যেহেতু এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর ও অমানবিক ঘটনা, তাই সরকারপক্ষ চাইছে জেল হেফাজতে রেখেই অভিযুক্তের বিচার হোক।