নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লকডাউনে পার্শ্বশিক্ষকদের পারফরম্যান্সের হিসেব নিতে শুরু করেছে একাধিক জেলা। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাঁদের হাজিরা, কাজকর্মের বিবরণ নির্দিষ্ট ফরম্যাটে পাঠাতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে পার্শ্বশিক্ষকদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, লকডাউনের সময় ছাত্রছাত্রীদের কাছে গিয়ে তাদের পড়াশোনার খোঁজখবর নিতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। সেটা কতটা করা গিয়েছে, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু এ কাজের দায় শুধুমাত্র তাঁদের উপর বর্তাবে কেন, এই প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। হুগলি, পূর্ব বর্ধমান সহ কিছু জেলায় এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এর বিরুদ্ধে পার্শ্বশিক্ষকরা হুগলির জেলাশাসকের দপ্তরে গিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়ে এসেছেন। তাঁদের বক্তব্য, মার্চ থেকেই স্কুল বন্ধ। এই অবস্থায় ছ’মাসের হাজিরা চাওয়ার মানে কী? মিড ডে মিল বিলিতে পার্শ্বশিক্ষকরা কতটা সহযোগিতা করেছেন, এটা আসলে তারই হিসেব নেওয়া। পাশাপাশি ছাত্রদের পড়াশোনায় কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, এলাকায় ঘুরে তা দেখার কথা বলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কোথাও সেই কাজ জোর দিয়ে প্রায় হয়নি বললেই চলে। কিন্তু পার্শ্বশিক্ষকরা স্থানীয় হওয়ায় তাঁদেরই কাঠগড়ায় তোলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
এদিকে, প্রায় ৫০ হাজার পার্শ্বশিক্ষকের আবেগকে কাজে লাগাতে ময়দানে নেমেছে বিভিন্ন ডান-বাম শিক্ষক সংগঠন। বিজেপিও তাদের একটি পার্শ্বশিক্ষক সংগঠন চালু করেছে। এমনকী তৃণমূল শিক্ষাসেলও পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের নেতারা সম্প্রতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেছেন। অধীরবাবু এই নিয়ে লোকসভায় সরব হবেন আশ্বাস দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রায় ২০ হাজার পার্শ্বশিক্ষককে দিয়ে মামলা করানোর পরিকল্পনাও তারা করেছে। সামগ্রিকভাবে পার্শ্বশিক্ষকদের বক্তব্য, তাঁদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়। সমগ্র শিক্ষা অভিযানের বিভিন্ন কর্মীদের থেকেও তাঁরা অনেকটাই কম বেতন পান। এটা তাঁদের সম্মানের প্রশ্নও হয়ে দাঁড়িয়েছে।