কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
শুক্রবার দুপুরে গাড়ির মধ্যেই লক্ষ্মীদেবীকে খুন করে শিবশঙ্কর। তাঁর দেহ নিয়ে গোটা শহর চষে বেড়িয়েছিল সে। সন্ধ্যায় নোনাডাঙার খাল পাড়ে দেহ ফেলে দিব্যি ভাড়াও খাটে শিবশঙ্কর। গভীর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। জেরায় খুনের কথা কবুলও করে নেয় সে। কিন্তু মাত্র ৩৩ হাজার টাকার জন্য কেন লক্ষ্মীদেবীকে খুন করতে গেল শিবশঙ্কর?
সেই প্রশ্ন উত্তর খুঁজতে গিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, শিবশঙ্করের মাসিক রোজগার খুব একটা মন্দ ছিল না। কিন্তু আয়ের বেশিরভাগটাই সে ব্যয় করত বিলাসবহুল জীবন-যাপনে। সবসময় এলাকাবাসী ও বন্ধুদের সামনে বিলাসিতার বেলুন ওড়াত সে। পরিপাটি থাকত দামি ব্র্যান্ডের জামাকাপড়ে। হাতে নামি কোম্পানির ঘড়ি। ব্যবসা বড় হয়েছে বোঝানোর জন্য বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত পার্টিও করত সে। শুধু তাই নয়, শহরের একাধিক পানশালাতেও তার যাতায়াত ছিল। ফূর্তি করেই উড়িয়ে দিত রোজগারের বেশিরভাগ টাকা।
মূলত এই কারণেই গাড়ির কিস্তির টাকা শোধ করার সময় টানাটানি শুরু হতো শিবশঙ্করের। আর সেই টাকা মেটানোর জন্য দেদার ধার করতে হতো তাঁকে। তদন্তকারীরা বলছেন, লকডাউনে তার পকেটে টান পড়ে। পরিচিত কয়েকজনের কাছে ধারও চায় সে। কিন্তু কেউ তাকে টাকা ধার দিতে চায়নি। শিবশঙ্কর তখন ঠিক করে, প্রতিবেশী কাকিমা অর্থাৎ লক্ষ্মীদেবীর কাছ থেকেই ফের টাকা ধার চাইবে। এর আগেও কাকিমা তাকে দু’দফায় মোট ৩৩ হাজার টাকা ধার দিয়েছিল। পুলিসি জেরায় ক্যাব চালক জানিয়েছে, সুদের কারবারি কাকিমার কাছে যে সবসময় মোটা টাকা থাকে, সেটা তার জানা ছিল। দ্বিতীয় দফায় তিন হাজার টাকা ধার নেওয়ার সময়ই কাকিমার হাতে নোটের মোটা বান্ডিল তার নজরে এসেছিল। শিবশঙ্কর তখনই বুঝতে পারে, চাইলে ধার মিলবে। কিন্তু তার সেই আশা পূরণ করেনি লক্ষ্মীদেবী। তাই তাঁর উপর রাগ জন্মায়। তখন থেকেই লক্ষ্মীদেবীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় শিবশঙ্কর। লকডাউনে ঘরবন্দি ছিলেন লক্ষ্মীদেবী। খুনের মওকা মেলেনি। লকডাউন শিথিল হতেই পরিচারিকার কাজ করতে বেরন লক্ষ্মীদেবী। দু’-একদিন নজর রাখার পরই শুক্রবার খুনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। এর জন্য ক’দিন আগে বন্দর এলাকার নেপালগঞ্জের একটি দোকানে যায় সে। বরাত দেয় স্পেশাল ছুরির। এরপর ছিল সঠিক সময়ের অপেক্ষা। প্ল্যানমাফিক। গাড়িতে লুকিয়ে রাখা সেই ছুরি চালাতে হাত কাঁপেনি শিবশঙ্করের।