বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
এক হাতে ক্যাবের স্টিয়ারিং। অন্য হাতে সব্জি কাটার ছুরি। পিছনের আসনে বসে এক মহিলা যাত্রী। তিনি চালকের পরিচিত। টাকাকড়ি নিয়ে দু’জনের ঝামেলা শুরু। কথা কাটাকাটি। তার পর যা ঘটল, তা এক কথায় রূদ্ধশ্বাস! নিজের বসার আসন খানিক পিছিয়ে মহিলার গলা চেপে ধরল চালক। বাধা দিতেই ছুরি ঢুকিয়ে দিল পেটে। ছটফট করতে করতে নিস্তেজ হয়ে পড়লেন মহিলা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলার নলিও কেটে ফেলল চালক। শুক্রবার গভীর রাতে লক্ষ্মী দাস (৪৫) নামে ওই মহিলার দেহ নোনাডাঙা খাল পাড়ের একটি ঝোপ থেকে উদ্ধার করে টালিগঞ্জ থানার পুলিস। ধরা পড়েছে ক্যাবের চালক শিবশঙ্কর মান্না। দু’জনেরই বাড়ি চারু মার্কেট থানার দেশপ্রাণ শাসমল রোডে। লক্ষ্মীদেবীকে কাকিমা বলে ডাকে শিবশঙ্কর। মাঝেমধ্যেই তাঁর কাছ থেকে টাকা ধার নিত সে। মোট ৩৩ হাজার টাকা শিবশঙ্করের কাছে পেতেন লক্ষ্মীদেবী। সেই টাকা পরিশোধ করা নিয়েই কিছুদিন ধরে দু’জনের ঝামেলা চলছিল। ফের শিবশঙ্কর টাকা ধার চায়। এবার দিতে অস্বীকার করাতেই লক্ষ্মীদেবীকে খুন করে সে। প্রাথমিক তদন্তে খুনের মোটিভ এটাই।
কখন ও কীভাবে খুন? পরিচারিকার কাজ করেন লক্ষ্মীদেবী। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। মুদিয়ালির একটি বাড়িতে কাজে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে বেরতেই তাঁকে গাড়িতে তুলে নেয় শিবশঙ্কর। ঘড়িতে তখন সাড়ে বারোটা। লক্ষ্মীদেবীর মেয়ে পূর্ণিমার কথায়, ‘মায়ের ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে মোবাইলে ফোন করি। সুইচ অফ। মা যে বাড়িতে কাজ করতে যান, সেই বাড়িতে ফোন করি। জানতে পারি, মা শিবশঙ্করের সঙ্গে দেখা করবে বলে অনেক আগেই বেরিয়ে গিয়েছে।’
শিবশঙ্করকে সন্দেহের তালিকায় রেখে তাঁরা থানায় ‘মিসিং ডায়েরি’ করেন। পুলিস ডেকে পাঠায় ক্যাব চালকের মাকে। তিনি ছেলেকে ফোন করেন। শিবশঙ্কর জানায়, সে পার্ক স্ট্রিটে। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে ছেড়ে বাড়ি ফিরবে। থানায় ডেকে আনা হয় শিবশঙ্করের বোন ও ভগ্নিপতিকেও। তাঁদের জেরা করেই পুলিস নিশ্চিত হয় লক্ষ্মীদেবীকে খুন করেছে শিবশঙ্কর। মোবাইল টাওয়ারের সূত্র ধরে তাকে গভীর রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিস। জেরার মুখে লক্ষ্মীদেবীকে খুনের কথা কবুল করেছে শিবশঙ্কর। সাদার্ন এভিনিউতে গাড়ি থামিয়ে খুন করে সে। গাড়িতে দেহ নিয়েই রাসবিহারী এভিনিউ হয়ে রুবির মোড়ে আসে। সেখান থেকে খালপাড়। দেহ ফেলে গ্যারেজে এসে সিট সাফ করে। এরপর এক্সাইড মোড়ের কাছে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে তুলে তাকে কামালগাজি ছেড়ে আসে।