বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ততক্ষণে তাঁর পরিচয় জানা হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুলিসের উল্টোডাঙার পঞ্চম ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল বিশ্বজিৎ কারক। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ডিসি (রিজার্ভ ফোর্স) সুখেন্দু হিরা, ডিসি (সেন্ট্রাল) সুধীরকুমার নীলকান্তমের নেতৃত্বে হেয়ার স্ট্রিট থানা এবং লালবাজারের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা। দ্রুত বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গিয়েছে, এটা আত্মহত্যার ঘটনা। যদিও তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। দুপুর আড়াইটের সময় বিশ্বজিতের দু’ঘণ্টার ‘দফা’ ডিউটি শুরু হয়েছিল। সাড়ে চারটের সময় তা শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই...! হাতে ধরা থ্রি নট থ্রি’তে পাঁচটি বুলেট ছিল। বাকি চারটি কার্তুজ অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে থাকা বুলেটের ব্যাগে ছিল আরও ১০টি গুলি। যে চেয়ারে বিশ্বজিৎ বসেছিলেন, তার কোনাকুনি রয়েছে বিচারবিভাগীয় যুগ্মসচিবের ঘর। মাত্র ১৫-২০ পা আগে একটি সিটিটিভি ক্যামেরাও রয়েছে। কিন্তু তা খারাপ থাকায় ঘটনার কোনও ছবি পাওয়া যায়নি।
বিশ্বজিতের আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-২ ব্লকের শ্রীবোরা গ্রামে। স্ত্রী মণিমালা কারক আরজি কর হাসপাতালের নার্স। তাঁদের আড়াই বছরের সন্তানও রয়েছে। দু’জনে মিলে পাতিপুকুরে একটা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। স্বামী-স্ত্রী কাজে যান... তাই বিশ্বজিতের মা মীরাবালা কারক ছেলের ফ্ল্যাটেই থাকেন। বাবা গোপাল চন্দ্র কারক এবং ছোটভাই সন্দীপ গ্রামের বাড়িতে থাকেন। গোপালবাবু ১৪ দিন আগেই বড় ছেলের বাড়ি থেকে ফিরেছেন। ঘটনায় হতবাক তিনিও। ঘটনাস্থলে বিশ্বজিতের ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে ডায়াজিপাম (ঘুমের ওষুধ) উদ্ধার হয়। স্ত্রী মণিমালা পুলিসকে জানিয়েছেন, বিয়ের আগে থেকেই তাঁর স্বামীর মানসিক কিছু সমস্যা ছিল। গত ৬-৭ মাস ধরে সেই সমস্যা আরও বেড়েছিল। কিন্তু কিছুতেই ডাক্তারের কাছে যেতে চাইতেন না। মুঠো মুঠো ওষুধ খেতেন। সব সময় আতঙ্ক, কেউ ওকে মেরে ফেলতে আসছে। তবে কি সেই আশঙ্কা থেকেই নিজেকে শেষ করে দিলেন বিশ্বজিৎ? ২০১২ সালে ঠিক এভাবেই মহাকরণে এক কনস্টেবল আত্মহত্যা করেছিলেন। ২০১৩ সালে রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে উঠে গিয়েছে। কিন্তু এখনও মহাকরণে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা, শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের দপ্তর রয়েছে। মাঝে মধ্যেই তাঁরা আসেন। তবে এদিন ঘটনার সময় কোনও মন্ত্রী ছিলেন না।