বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শহরের বিভিন্ন ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে দেখা গেল, সারি সারি ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সকালে গাড়ি ধুয়ে-মুছে ধূপ জ্বালানোই সার। কারণ বেলা গড়ালেও স্ট্যান্ড থেকে চাকা একবিন্দু সরছে না। সকাল ১১টা নাগাদ টালিগঞ্জ ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে লাইন দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। চালকরা জানাচ্ছেন, ওই স্ট্যান্ডের মাত্র ৩০ শতাংশ ট্যাক্সি রাস্তায় বেরিয়েছে। যাত্রীহীনতার কারণে বাকি গাড়ি বের করতে রাজি নন মালিকরা। ভোর ছটা থেকে বেলা বারোটা পর্যন্ত এখানকার চালকদের প্রত্যেকের মোট ভাড়ার প্রাপ্তি বলতে কমবেশি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। গৌতম হালদার নামে এক ট্যাক্সিচালক জানান, আনলক ওয়ানের শুরু থেকে গড় পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিদিন মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া হচ্ছে। অপরদিকে, দিন পিছু একটি গাড়ির জ্বালানি এবং অন্যান্য বাবদ খরচ হয় প্রায় ৫০০ টাকার কাছাকাছি। অর্থাৎ, সারাদিন গাড়ি চালিয়ে চালকরা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন নামমাত্র কয়েকটি টাকা। যা থেকে উঠছে না সংসার খরচ।
শহরের বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের আনাগোনা আপাতত বন্ধ। বিমানবন্দরেও যাতায়াত করছেন নামমাত্র কয়েকজন। ফলে বড় ট্রিপ একেবারেই নেই। তাঁদের মতে, অফিসপাড়া অভিমুখী কিছু যাত্রী এই মুহূর্তে উঠছেন। ডালহৌসি, পার্কস্ট্রিট, ধর্মতলা এবং সল্টলেক— মূলত এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ট্যাক্সির ঘোরাফেরা। সারাদিন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেও বউনি না করেই বাড়ি ফিরছেন বহু চালক। ধর্মতলা ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে এক চালকের করুণ মন্তব্য, ‘গত ৬ বছরের চালক জীবনে এটা আমার রেকর্ড, শনি ও রবি কোনও বউনি হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ট্যাক্সিতে উঠতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন। সেই কারণে লকডাউনের আগে প্রতিদিন প্রায় ২২০০-২৫০০ টাকা রোজগার করলেও, ইদানীং তা কমে ৭০০-৮০০ টাকায় এসে ঠেকেছে।’ যাত্রীদের আতঙ্ক থেকে মুক্ত করতে প্রত্যেক ট্যাক্সিচালক গাড়িতে স্যানিটাইজার রাখছেন। এমনকী প্রতিদিন নিজেদের খরচে গোটা গাড়িটিকে জীবাণুমুক্ত করাচ্ছেন।
করোনার ‘দোসর’ হয়ে চালকদের ভাতে মারছে জ্বালানির অগ্নিমূল্য। তেলের দাম প্রতিদিন বাড়লেও ভাড়া স্থির। ফলে এক অসম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। চালকদের একাংশের দাবি, ট্যাক্সিতে ওঠার ন্যূনতম ভাড়া বাড়ানো হোক। আবার অন্য অংশের মতে, ভাড়া বাড়লে যাত্রীহীনতা আরও বাড়বে। বলাই বাহুল্য, কার্যত দোটানায় হলুদ ট্যাক্সির চালকরা।