রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
উম-পুনের সেই রাতের আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি শীলারানি ভট্টাচার্যের পরিবার। স্বামীর মৃত্যুর পর কোনওরকমে ভাগের পুরনো দোতলা বাড়ি আর তিন অবিবাহিত মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। বৃদ্ধার মাথায় আক্ষরিক অর্থেই ছাদ
ভেঙে পড়েছিল নৈহাটি বিস্ফোরণে। প্রাচীন দেওয়ালে ফাটল ধরে গিয়েছিল।
ভেঙে গিয়েছিল জানালা। সেই ক্ষতি সামলে নেওয়া এখনও সম্ভব হয়নি। তারমধ্যেই উম-পুনের ধাক্কায় জরাজীর্ণ সেই ছাদ ভেঙেছে। চার মহিলার সংসারের আব্রু ধরে রাখে যে জানালা তার প্রায় সবটুকুই এবার খসে গিয়েছে। দেওয়ালের ফাটল আরও চওড়া হয়েছে।
উম-পুনের রাতে সেই দেওয়াল ধসে পড়ার আতঙ্কে মেয়েদের আগলানোর পাশাপাশি তিনি শুধু কেঁপেছেন। পরিবারের আর্থিক সহায় বলতে বৃদ্ধার ভাতার টাকা আর ছোট মেয়ের কায়ক্লেশে উপার্জিত সামান্য অর্থ। কপালের এমন দোষ যে, অনেকেই নৈহাটি বিস্ফোরণে ক্ষতিপূরণ পেলেও নাম বাদ গিয়েছিল কেবল ওই বৃদ্ধারই। শীলাদেবী বলেন, মাথার উপরের ছাদটাই তো চলে যাওয়ার জোগাড়। গরিবকে কেউ দেখে না, বোধহয় ঈশ্বরও নয়!
নৈহাটি বিস্ফোরণে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল গঙ্গাপাড়ের সুব্রত মালিকের। আর উম-পুনের তাণ্ডব দেশলাই বাক্সের মতো দুমড়ে দিয়ে গিয়েছে ময়ূরপঙ্খী ঘাটের কাছে থাকা টিনের দোকান। সামান্য সেই চা বিস্কুটের দোকানই সুব্রতবাবুর আয়ের উৎস। লকডাউনে জেরে দোকান খোলেননি বহুদিন। তারপরেও যেটুকু স্বপ্ন দেখার সাহস ছিল কেড়ে নিয়েছে উম-পুন।
বাবুগঞ্জ লেবুতলার পরেশ মল্লিকের কলকাতার এক গদির চাকরি গিয়েছে এই সেদিন। কাঠবেকারের বাড়িতেও নৈহাটি বিস্ফোরণ দেওয়াল নষ্ট করে দিয়েছিল। চার মাসের মাথায় উম-পুনের হানায় প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে ছোট্ট সেই আস্তানা। একদিকে অর্থাভাব, অন্যদিকে একের পর আঘাতে জীবনযাপনই সঙ্কটে পড়েছে পরেশবাবুর। একরাশ অসহায়তা। বলছিলেন, কী করব, জানি না।
চার মাসের ব্যবধানে পরপর দু’টো বড় ধাক্কা বিধ্বস্ততার অন্তিম চরণে পৌঁছে দিয়েছে চুঁচুড়া পুরসভার গঙ্গাপাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার জনজীবন। তাঁদের কষ্টের কথা স্বীকার করে স্থানীয় কাউন্সিলার জয়দেব অধিকারী ও পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান অমিত রায় বলেন, এবছরের জানুয়ারি থেকেই ওই এলাকার মানুষদের দুর্ভোগ চলছে। আমরা কিছু সাহায্য করেছি। যতটা সম্ভব ফের করা হবে।