নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মাসখানেক পর থেকেই সব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু করোনার জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে বাইরে গিয়ে হাতে কলমে কাজ জানা ও শেখা কার্যত অসম্ভব। খোদ অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) বাড়িতে বসে ইন্টার্নশিপের মতো চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে বলেছে। এই পরিস্থিতিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এবছর ইন্টার্নশিপ করতে যেতে পারবেন না বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে আপাতত তা অনিশ্চিত। পরিস্থিতির যদি উন্নতি হয়, তাহলে বছরের শেষে ছেলে-মেয়েদের ইন্টার্নশিপে পাঠাতে পারে তারা। তবে এদের চেয়ে ব্যতিক্রম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ঘরে বসেই পড়ুয়াদের চ্যালেঞ্জিং কাজকর্ম দেওয়ার কথা ঠিক করেছে তারা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ারা ১ থেকে ৩০ জুন এই ইন্টার্নশিপ করতে বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। কিন্তু এবার তা হবে না বলেই আশঙ্কা করছেন শিক্ষকরা। লকডাউনের পর কবে প্রতিষ্ঠান খুলবে, তারপর পরিস্থিতি কী হবে, এইসব কথা মাথায় রেখে অন্তত যে পরীক্ষা বাকি রয়েছে, তা জুন মাসে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। তারপর পরিস্থিতি বুঝে ডিসেম্বরে পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপে পাঠানো যায় কি না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যাদবপুরের অধ্যাপকদের মতে, এবছর ছেলে-মেয়েরা কাজ শিখতে বাইরে যেতেই পারবে না। লকডাউনের পরও সবটা স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। তার মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া, সিলেবাস শেষ করা ইত্যাদি কাজ রয়েছে। ফলে ছেলেমেয়েদের ইন্টার্নশিপে পাঠালে এই জরুরি প্রক্রিয়া আটকে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, এবার ইন্টার্নশিপ করানোটা সমস্যার। যাদবপুর নয়, দেশের অনেক কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানেও সেটা অনিশ্চিত। আগে পরীক্ষা ও অন্যান্য জরুরি কাজগুলি মিটিয়ে নেওয়া দরকার।
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য এআইসিটিই’র নির্দেশ মতো ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে বসেই চ্যালেঞ্জিং কাজ দিচ্ছে। কোন বিষয়ে কী কাজ দেওয়া যেতে পারে, তাও প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয়েছে। যেমন কম্পিউটার বা আইটি পড়ুয়াদের মোবাইল অ্যাপলিকেশন বা প্রোগ্রামিং তৈরি করতে বলা হবে। মেকানিক্যাল, সিভিল কিংবা ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু উদ্ভাবনীমূলক কাজের তালিকা ভাবা হয়েছে। বাড়ি বা গাড়ির নতুন ডিজাইন তৈরি করার কাজ দেওয়া হবে তাঁদের। এসবের জন্য একটি কমিটি গড়েছে কর্তৃপক্ষ, তারাই পুরো বিষয়টি দেখছে। উপাচার্য সৈকত মৈত্রের বক্তব্য, বাড়িতে বসেই যাতে সৃজনশীল কাজ করতে পারে পড়ুয়ারা, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কলকাতা বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য বাড়িতে বসে ‘কাজ’ দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। কলকাতার এক অধ্যাপক বলেন, কম্পিউটার বা আইটি বিষয়ের উপর বাড়িতে বসে কাজ করা সম্ভব হলেও বাকি বিষয়গুলিতে তা করা যায় না, তার জন্য বেরতে হবেই। যাদবপুর কর্তৃপক্ষও কলকাতার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে।