নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দমদম জেলে সাম্প্রতিক গণ্ডগোলের ঘটনায় সরানো হলো মনুয়া মজুমদারের প্রেমিক, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি অজিত রায়কে। গণ্ডগোলে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাকে পাঠানো হয় মেদিনীপুরের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। পাশাপাশি মনুয়া মজুমদারকেও দমদম মহিলা জেল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বর্ধমান কেন্দ্রীয় জেলে। গণ্ডগোলের পরদিন, ২২ মার্চ মহিলা জেলে যে বিক্ষোভ হয়েছিল, তাতে সে জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। তবে সারদাকাণ্ডে অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের রেকর্ড বরাবরই ভালো বলে দাবি জেল কর্মীদের একাংশের। তাই তাকে ওই জেলেই রাখা হয়েছে। এক জেল কর্তার কথায়, দেবযানী ম্যাডাম কোন ঝামেলার মধ্যে থাকেন না। আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে থাকার সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ওঠেনি। উল্টো তিনি সকলের কাছে হেড দিদিমণি হিসেবেই বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছিলেন। আজও তিনি সেই নামেই পরিচিত আছেন দমদম মহিলা কেন্দ্রীয় জেলে। জানা গিয়েছে, গণ্ডগোলের দিন তিনি তাঁর সেল থেকে বের হননি। উল্টে তিনি অন্য মহিলাদের বারবার সংযত হওয়ার কথা বলছিলেন। পুরো বিষয়টি কারাকর্মীদের নজরেও আসে। কিন্তু দমদম জেলের ধুন্ধুমার কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে যুক্ত মনুয়া ও তার প্রেমিক। ফলে এই জেল থেকে ৪০ বন্দিকে অন্য জেলে পাঠানোর তালিকায় ছিল ওই দুইজনের নাম।
এই অজিতই ঠান্ডা মাথায় তার প্রেমিকা মুনয়ার স্বামী অনুপম সিংহকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। ঘটনার সময় অনুপমের তীব্র আর্তনাদ অজিত মোবাইলে রেকর্ড করে পাঠিয়েও দেয় মনুয়াকে। এই পরকীয়া প্রেম থেকে খুনের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে সে সময় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বারাসতের দায়রা আদালত অজিত-মনুয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। এরপরে দু’জনের স্থান হয় দমদম জেলে। মাঝেমধ্যে ওই দুজন যেকোনো জেলের অনুষ্ঠানে দেখা হলে হাত নেড়ে কথাবার্তা বলত। তাদের মধ্যে আকর্ষণ অক্ষত ছিল বলেই জানায় জেলকর্মীদের একাংশ। তাই দু’জনকে দুটি ভিন্ন জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানতে পেরে তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। অজিতকে দমদম জেল থেকে মেদিনীপুর জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় সে জেল কর্মীদের প্রশ্ন করে, মনুয়া ভালো আছে তো? ওর কোন ও অসুবিধা হচ্ছে না তো? যদিও কোনও জবাব দেননি কারাকর্মীরা।