নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: লকডাউন ভাঙার খেলায় মাতল বারুইপুর, সোনারপুর উত্তর, সোনারপুর দক্ষিণ, মহেশতলা, বজবজ। কোথাও দলবেঁধে চায়ের দোকানে কোথাও রাস্তা মোড়ে আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছে অনেককে। এছাড়াও মাছের পাইকারি বাজারে ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বারুইপুর, ডায়মন্ডহারবার, সুন্দরবন তিন জেলার পুলিস ও জেলা প্রশাসনের টিম সক্রিয় ছিল। মাইকে প্রচারের পাশাপাশি কোথাও কোথাও কাজ না হওয়াতে লাঠি উঁচিয়ে ভিড় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অটো, টোটো থেকে অপ্রয়োজনে কোনও গাড়ি চলতে দেওয়া হয়নি। এরমধ্যে বারুইপুর পুরসভার এক সাফাই কর্মী অহেতুক রাস্তায় আড্ডা দেওয়াতে পুলিস ধমকে সরিয়ে দেয়। তা নিয়ে জলঘোলা করেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান গৌতম দাস। পুলিস ওই সাফাই কর্মীকে মারধর করেছে, এই অভিযোগে পুর পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন। তা নিয়ে পুলিস আধিকারিকদের সঙ্গে বচসাও হয়। পুলিস কর্তারা সাফ জানিয়ে দেন, আইন মেনে কাজ করা হচ্ছে। পুলিসের প্রশ্ন বারুইপুর পুরসভা কেন সাফাই কর্মীকে পরিচয়পত্র দেয়নি। ভাইস চেয়ারম্যানের এই আচরণ নিয়ে কাউন্সিলারদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, গৌতমবাবু কি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেয়েও বড়? বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ভাইস চেয়ারম্যানের আচরণ সমর্থন করেননি। তিনি বলেন, এটা সঠিক কাজ হয়নি। বরং পুলিস ও প্রশাসন সঠিক কাজ করছে। বিমানবাবু বলেন, পুরসভাকে বলেছি, সাফাই কর্মীদের দ্রুত পরিচয় পত্র দিতে। যাতে রাস্তায় কাজে বেরলে পুলিস শনাক্ত করতে পারে।
এদিকে, লকডাউন ভাঙার জন্য বারুইপুর পুলিস জেলা ৯ জনকে সোনারপুর স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি ডায়মন্ডহারবার পুলিস জেলা সব মিলিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বারুইপুর পুলিস সুপার রশিদ মুনির খান, ডায়মন্ডহারবার পুলিস সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, আইন ভাঙলে গ্রেপ্তার জারি থাকবে। সুন্দরবন পুলিস জেলার সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, এখানকার সমস্ত থানাগুলিতে সকলে আইন মেনে চলেছে। অন্যদিকে, বারুইপুর মহকুমা শাসক দেবারতি সরকার জানিয়েছেন, আগামীকাল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটার জন্য সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকবে। বাকি সময় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আলিপুর মহকুমা, ক্যানিং মহকুমা ও কাকদ্বীপ মহকুমাতে সময়সীমা নির্দিষ্ট না হলেও সেদিকেই এগচ্ছে। জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, লকডাউনের প্রতি মানুষ সম্মান জানালে তাঁদেরই উপকার হবে। এটা মনে রাখা জরুরি।