রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
হাওড়া থেকে প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, সোমবার বিকেলের পর থেকেই হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচার শুরু করেছিল পুলিস। সন্ধ্যার দিকেও বাজারহাট, রাস্তায় ভিড় ছিল ভালোই। প্রশাসনের তৎপরতায় যদিও অনেক জায়গায় ভিড় হাল্কা হয়। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে মানুষকে ঘরে ঢোকাতে পুলিসকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেল। কোথাও পুলিস লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করল জনতাকে, কোথাও আড্ডায়, গল্পে জমজমাট চায়ের দোকানের ঝাঁপ ফেলে দিতে হল পুলিসকে। চলল ধরপাকড়ও। ছুটন্ত বাইক থামিয়ে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ থেকে শুরু করে জমায়েত দেখলেই তেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটল হাওড়া শহরের নানা জায়গায়।
এতসবের পরও বহু মানুষ সরকারি নিষেধাজ্ঞা, প্রশাসনিক হুঁশিয়ারিকে থোড়াই কেয়ার করার ভাব নিয়ে চলেছে। সকালের দিকে মাছ, মাংসের দোকানের ভিড় দেখে মনে হতে পারে, আতঙ্ক নয়, বরং ছুটির আনন্দ বিরাজ করছে। কালীবাবুর বাজার, কদমতলা বাজারে সকালে ছিল ব্যাপক ভিড়। তবে অন্যান্যদিনের তুলনায় মাস্ক বেশি লোক পরেছেন। বিভিন্ন এলাকায় পুলিস সক্রিয় হওয়ার পর জটলা কমে গিয়েছে। বালি, বেলুড় এলাকায় জি টি রোড, জে এন মুখার্জি রোডের মতো বড় রাস্তাগুলি শুনশান থাকলেও ভিতরের বিভিন্ন রাস্তায় লোকজন ভালো সংখ্যাতেই বেরিয়েছে সকালের দিকে। হাওড়া পুলিসের ডিসি (সদর) প্রিয়ব্রত রায় জানান, পুলিসি টহল চলছে। ভিড় দেখলেই তা হটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেককে আটক করা হয়েছে। জগাছা থানার পুলিস লকডাউন নির্দেশিকা অমান্য করার অপরাধে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে এবং বাইক সহ মোট ৯টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে। পুলিস কড়া হতেই এর পর এলাকায় আর সেভাবে মানুষকে বেরতে দেখা যায়নি।
চুঁচুড়া থেকে প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার দিনভর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পথে নেমে মানুষকে ঘরে ঢোকাতে হল চন্দননগর কমিশনারেট ও গ্রামীণ পুলিসকে। ভদ্রেশ্বর, সিঙ্গুরের মতো একাধিক জায়গায় ভিড় সরাতে মৃদু লাঠিচার্জও করে পুলিস। দিনভর প্রচুর মানুষকে আটক করা হলেও তাঁদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে কোন্নগর পুরসভার কাউন্সিলার তন্ময় দেবকে জোর করে দোকান খোলানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পুলিস। মঙ্গলবার পরে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিস জানিয়েছে, জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দেওয়া হয়েছিল। তবে দিনভর হুগলির বিভিন্ন এলাকায় মানুষের অকারণে পথে নামা রুখতে গিয়ে বিব্রত হতে হয়েছে পুলিসকে। একশ্রেণীর মানুষের অসংবেদনশীল আচরণ নিয়ে পুলিস, প্রশাসন মহলে ক্ষোভের আভাসও মিলেছে। আজ, বুধবার আরও কঠোর পদক্ষেপ করার জন্যে স্থানীয় পুলিস কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চন্দননগর কমিশনারেটের কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। প্রাথমিক সতর্কবার্তা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করতে যে পুলিস দ্বিধা করবে না তা স্পষ্ট করা হয়েছে। কোন্নগরে আইন না মানায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জেলার পুলিস সুপার(গ্রামীণ) তথাগত বসু বলেন, কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে পুলিস এলাকায় এলাকায় জমায়েত রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে। হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, পুলিস তাদের মতো পদক্ষেপ করেছে। আমরা দলের কাছে ওই কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন করব।
সোমবারই হুমড়ি খেয়ে বাজারে নেমেছিল আমজনতা। মঙ্গলবার নিখাদ খেয়ালে বা ছুটি উদযাপন করতে হুগলি জেলা সদর চুঁচুড়া, মহকুমা সদর শ্রীরামপুর, গ্রামীণ এলাকা সিঙ্গুর, তারকেশ্বর, ধনেখালিতে বেশ কিছু মানুষকে পথে নামতে দেখা যায়। বেশকিছু চায়ের দোকান সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নয় এমন দোকানপাটও খুলতে দেখা গিয়েছে। সকালে এই পরিস্থিতি জেনেই পুলিসকে সক্রিয় থাকতে হল এলাকা, কোথায় ভয় দেখিয়ে কোথাও আটক করে কোথাও বা মৃদু লাঠিচার্জ করে আমজনতাকে ঘরে ঢোকাতে হয় পুলিসকে।