বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পোস্ট ডক্টরেট করতে ইজরায়েল গিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার এক গবেষক। ইতিমধ্যে তাঁর পিএইচডি ভাইভার সময় এগিয়ে আসতে থাকে। তখন ওই গবেষক যোগাযোগ করেন যাদবপুর ইউনিভার্সিটি রিসার্চ স্কলার অ্যাসোসিয়েশন বা জুরসার সঙ্গে। জুরসার তরফে সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যর কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়, ওই গবেষকের ভাইভা যেন স্কাইপের মাধ্যমে নেওয়া হয়। চিরঞ্জীববাবু বিষয়টি বিজ্ঞান বিভাগের ডিনের অফিসে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ ধরনের কোনও নিয়ম না থাকায় বিষয়টি আটকে যায়। বাধা আসে সেই অফিস থেকে। বলা হয়, বর্তমান আইন অনুযায়ী ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীর সশরীরে উপস্থিত হওয়া বাধ্যতামূলক। অগত্যা, ওই ছাত্রের ভাইভার ব্যবস্থা করতে দ্বারস্থ হতে হয় ইজরায়েলের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপকের উপর। তাঁরাই তাঁর ভাইভা নেন।
চিরঞ্জীববাবু এ প্রসঙ্গে বলেন, ইন্টারভিউ ভিডিও কনফারেন্স করে হবে নাকি সামনাসামনি, এটা নিয়ে অধ্যাপকদের মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব রয়েছে। অনেকেই বলেন, সামনাসামনি ইন্টারভিউ করলে অনেক পাল্টা প্রশ্ন করা যায়। ভিডিও কলে সেই সুযোগ কম। তাছাড়া, ইন্টারভিউ বোর্ডের যে পরিবেশ হয়, সেটা সম্পূর্ণ আলাদা হয়। আবার এর পাল্টা মতও রয়েছে। এখন বিভিন্ন প্রযুক্তি রয়েছে। তাতে একসঙ্গে অনেকে মিলে প্রশ্ন করতে পারেন। আমি দেখেছি, বহু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর নিয়োগের ইন্টারভিউ হচ্ছে স্কাইপ জাতীয় ভিডিও কলিং অ্যাপের মাধ্যমে। সেখানে এটা তো পিএইচডির ভাইভা। এটা নিয়ে অভিন্ন নীতি নেই। আইআইটি খড়্গপুর বা এনআইটি রৌরকেল্লায় স্কাইপ ইন্টারভিউ গ্রাহ্য হয় না। আবার আইআইটি দিল্লি বা এনআইটি কালিকটে তা গ্রাহ্য হয়। সশরীরে পৌঁছতে অনেক সময় কিছু সমস্যা থাকে। সেজন্য সময় এবং খরচ দুইয়েরই ব্যয় বেশি। তাই এই ব্যবস্থাকে নিয়মের মধ্যে আনার ভাবনাচিন্তা চলছে।
জুরসার সম্পাদক শুভদীপ দাস বলেন, এখন ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই রয়েছে। প্রযুক্তির দিক থেকে কোনও বাধা নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয় এটা চালু করতেই পারে। আমরা আগামী এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের সময় এটা নিয়ে স্মারকলিপিও দেব। পদার্থবিদ্যার এক গবেষক আবেদন করেছিলেন, তাঁর ভাইভা যাতে স্কাইপে করা হয়। কারণ তিনি ইজরায়েলে ছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে রাজি করানো যায়নি। অগত্যা বিদেশি অধ্যাপকদের সামনে তাঁকে ভাইভায় বসতে হয়। এখানকার অধ্যাপকদের সামনে বসলে তিনি যে অনুকূল পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বসতে পারতেন, তা ওখানকার বিশেষজ্ঞদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই পাননি। বিশেষ করে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চের জন্য বিদেশে চলে যাওয়া প্রার্থীদের এর জন্য অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।