দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
বিয়ের মরশুম শুরু হলেই জমজমাট হয়ে ওঠে কলেজ স্ট্রিট এলাকা। কিন্তু সেই ভিড় আজ চোখে পড়াই দায়। এই প্রসঙ্গে কলেজ স্ট্রিটের ব্যবসায়ীদের দাবি, ইদানীং ডিজিটাল কার্ডের ব্যবহার অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে। তথাকথিত পুরনো ঘরানার কার্ড আজ বাতিলের খাতায়। ফলে চূড়ান্তভাবে মার খাচ্ছে ব্যবসা। শঙ্কর ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রুচিবোধ অনেকাংশে পাল্টে গিয়েছে। তাই আমাদেরও ব্যবসার পদ্ধতি বদলে ফেলতে হয়েছে।’ ব্যবসায়ীদের হিসেব বলছে, বিয়ের ক্ষেত্রে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা যদি হয় ৩০০ জন, সেক্ষেত্রে ১০০টি কার্ডের বরাত নেন তাঁরা। পরিবার পিছু গড়ে একটি করে কার্ড ধরা হয়। সতীনাথ রায় নামে এক নিমন্ত্রণপত্র বিক্রেতা বলেন, ইদানীং ৩০০ জন নিমন্ত্রিতের জন্য এখন ১০০-র জায়গায় ৭৫টি কার্ডের অর্ডার দেওয়া হচ্ছে। বাকি সব নিমন্ত্রণ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সেরে ফেলা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মোবাইল অথবা কম্পিউটারের মাধ্যমেই বানিয়ে ফেলা হচ্ছে অত্যাধুনিক নকশার কার্ড। বর্তমান প্রজন্ম চিরাচরিত নকশার কার্ড পছন্দ করে না। তাই তাঁরা বিশেষভাবে নিজেদের পছন্দমতো নিমন্ত্রণপত্র তৈরি করে নিচ্ছেন। প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে নতুন নকশার কার্ডের প্রতি গ্রাহকরা আকৃষ্ট হয়ে পড়ছেন। অনেকেই এখন তাঁদের নিজেদের বিয়ের কার্ড নিজেরাই বানিয়ে নিচ্ছেন। কেউ বা সাহায্য নিচ্ছেন ‘আর্ট ডিজাইনার’ কিংবা ‘ওয়েব ডিজাইনার’দের। তাঁরাই গ্রাহকের পছন্দমতো ছবি এবং লেখা দিয়ে বানিয়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল কার্ড। সুব্রত সাহা নামে এক ওয়েব ডিজাইনার জানিয়েছেন, প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের চিন্তাধারারও পরিবর্তন হয়েছে। পাশাপাশি কর্মসূত্রে মানুষ আজ অত্যন্ত ব্যস্ত। ব্যস্ততার মধ্যে তাঁদের পক্ষে আর আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি গিয়ে নিমন্ত্রণপর্ব সারা সম্ভব নয়।
অপরদিকে ব্যবসার হাল ফেরাতে বদ্ধপরিকর নিমন্ত্রণপত্র ব্যবসায়ীরা। তাঁরাই এখন নিজেদের দোকানে ডিজিটাল মাধ্যমে নয়া নকশা বানাতে সক্ষম এমন কর্মচারীদের নিযুক্ত করছেন। এর ফলে কার্ডের ব্যবসার হাল পুনরায় ফিরে আসবে বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, এবার থেকে নির্দিষ্ট দোকানে গেলে ক্রেতারা তাদের মনপসন্দ ‘কাস্টোমাইজড’ ডিজিটাল কার্ড বানাতে পারবেন। এমনকী ক্রেতারা কার্ডের নকশা দিলেও দোকান থেকে তা ছাপিয়ে দেওয়া হবে। ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন নিমন্ত্রণ কার্ড ব্যবসায়ীরা। শুধু বিয়ে নয়, অন্নপ্রাশন, উপনয়নের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। কার্ডের বাজার তাই ধুঁকছে। সেখান থেকে এই পরিকল্পনা তাঁদের ব্যবসায় কোনও অক্সিজেন জোগাতে পারে কি না, তারই অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা।