সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: মদের ঠেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল কয়েকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে উলুবেড়িয়া থানার বোয়ালিয়ার আমতলা হাসপাতাল মোড়ে। মৃত যুবকের নাম মন্তাজুল রহমান (৩৮)। বাড়ি উলুবেড়িয়া থানার সমরুকে। ঘটনায় মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে উলুবেড়িয়া থানার পুলিস প্রশান্ত মান্না ও প্রদ্যুৎ ঘোষ নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি একটি খুনের মামলা রুজু করেছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে ইমারতি দ্রব্য কেনার জন্য মন্তাজুল মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয়। কিছু্ক্ষণ পরেই তার কয়েকজন পরিচিত যুবক মদ খাওয়ার নাম করে তাকে ফোনে বোয়ালিয়ার আমতলা হাসপাতাল মোড়ে ডেকে পাঠায়। মন্তাজুল তার এক সঙ্গী শেখ মেহবুবকে সঙ্গে নিয়ে গেলে সেখানে থাকা যুবকরা এই দু’জনকে ব্যাপক মারধর শুরু করে। মেহবুব কোনরকমে পালিয়ে গেলেও মন্তাজুলকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় অভিযোগ।
এদিকে মন্তাজুলের খুনের খবর পাওয়ার পরেই এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁরা মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উলুবেড়িয়া থানার বিশাল পুলিস বাহিনী, নামানো হয় র্যা ফ। ঘটনাস্থলে পৌঁছন হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিসের অতিরিক্ত সুপার আশিস মৌর্য, উলুবেড়িয়ার এসডিপিও পার্থ ঘোষ। পরে পুলিস দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। রাতেই পুলিস বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় মৃতের পরিবার ৮ জনের নামে উলুবেড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
এদিকে, দু’জন গ্রেপ্তার হলেও বাকিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার সকাল থেকেই মৃতের পরিবার ও গ্রামবাসী উলুবেড়িয়া থানায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরে পুলিস বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিত স্বাভাবিক হয়। এদিন বিকালেও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী উলুবেড়িয়া স্টেশন মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। বিক্ষোভ চলাকালীন কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে। পরে ফের বিশাল পুলিস বাহিনী ও র্যা ফ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রবিবারের রাতের ঘটনা সম্পর্কে মৃত যুবকের সঙ্গী শেখ মেহবুব বলেন, মন্তাজুল ৩০ হাজার টাকা সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ওরা তাকে ফোনে ডেকে পাঠায়। তাঁরা দু’জনে সেখানে গেলে অভিযুক্তরা আক্রমণ করে। মৃত যুবকের মা মর্জিনা বেগমের অভিযোগ, রবিবার ছেলে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর রাতে শুনি সে হাসপাতালে ভর্তি। পরে হাসপাতালে শুনি, তাকে খুন করা হয়েছে। যারা তাঁর ছেলেকে খুন করেছে, তিনি নিজের হাতে তাদেরও খুন করতে চান বলে এদিন দাবি করেন মর্জিনা বেগম। পুলিস সুপার সৌম্য রায় বলেন, ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।