ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি। শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
সেদিন স্কুলেই যাওয়ার কথা ছিল না ঋষভের। পিসির বিয়ে উপলক্ষে হবু বরের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল কনের বাড়ির সদস্যদের। ছোট্ট ঋষভও জেদ ধরেছিল সে স্কুলে না গিয়ে দুপুরে হবু পিসেমশাইয়ের বাড়ি যাবে। কিন্তু প্রায় জোর করেই সেদিন তাকে স্কুলে পাঠানো হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারির বিয়ের তারিখ ইতিমধ্যেই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, শনিবার দিনভর শান্তিভিলার ঘরে কান্নার সুরে ঘুরে ফিরে এসেছে সেই আক্ষেপ। পিসির বিয়ের জন্যে সাধ করে কেনা একাধিক পোশাকও যে রয়ে গেল ভাঁজ না খোলা অবস্থায়। পরিবারের আক্ষেপ, সেই যে আসছি বলে গেল ফুটফুটে ছেলেটা, ৮ দিন পরে ফিরল প্রাণহীন হয়ে।
এমনিতে ডাকাবুকো ছেলে হলেও রাস্তা পার হতে ভয় পেত ঋষভ। বেনিয়াপাড়া লেনের শান্তিভিলা থেকে বের হলেই প্রতিবেশী, পরিচিত জনদের কাছে সে আবদার করত রাস্তা পার করিয়ে দেওয়ার। সেই রাস্তাই তার প্রাণ কেড়ে নিল, বলতে বলতে শনিবার দুপুরে আছাড়িপিছাড়ি করে কাঁদছিলেন বছর তেইশের প্রতিবেশী তরুণী মুসকান খাতুন। রাস্তায় দেখা হলেই তাঁর চুল টেনে দিত চপল ঋষভ। মরদেহের পেছনে যেতে যেতে বিলাপের সুরে সে কথাও বলছিলেন তরুণী। শনিবার সকাল থেকে ঋষভের বাড়ির কাছে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রবীণা তন্দ্রা দাস। ছেলে বুড়োর বন্ধু মৃত ঋষভের বাবা সন্তোষ সিং। কলকাতার হাসপাতালে থাকা ছেলের কাছেই সকালে খবর পেয়েছেন আর নেই বাচ্চাটা। প্রবীণা বললেন, একাই পাড়া মাতিয়ে রাখত। আমি মানত রেখেছিলাম গো, আহা ও আর ফিরবে না ভাবতেই পারছি না।
ভাবতে পারছে না পরিবারও। ঋষভের মা প্রমীলাদেবী ছেলের মরদেহ আসতেই উন্মাদিনীর মতো পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয়দের আগল ভেঙে ছুটে এসেছিলেন। সকাল থেকে বারে বারে জ্ঞান হারিয়েছেন। ছেলের প্রাণহীন দেহ দেখে মূর্ছা গেলেন আরও একবার। মধ্য দুপুরে শ্মশানে জমাট বাঁধা ভিড়ের মধ্যে তখন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহেবুব রহমান, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়, সেচ কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গোপাল রায়, বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল সহ শাসকদলের নেতাদের উপস্থিতি। তাঁদেরও গলাতে ছোট্ট শিশুর অকাল বিদায় নিয়ে হুতাশই ধরা পড়েছে।