বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এবার প্রথম এবিভিপি আর্টস এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টিতে কেন্দ্রীয় প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছিল। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভালো ফল করলেও আর্টসে পিছিয়েই রইল তারা। অন্যদিকে টিএমসিপি সায়েন্সের একটি পদে, ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্টসের ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু সেইভাবে তারা দাঁত ফোটাতে পারেনি। বিজ্ঞান ফাকাল্টিতে চেয়ারপার্সন পদে প্রার্থী দিয়েছিল টিএমসিপি। ওই পদে তাদের ঝুলিতে মাত্র আটটি ভোট পড়েছে। এবারও যে যাদবপুরের পড়ুয়ারা শাসক দলের ছাত্র সংগঠনকে ব্রাত্য করে রাখল, তা এই ভোটের ফলই বলে দিচ্ছে।
টিএমসিপির দাবি, আর্টস ফ্যাকাল্টি থেকে বেশ কিছু এবং সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে একটি করে ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে জয়ী হয়েছে তাদের প্রার্থী। কলা শাখার ভোট গণনা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বিতর্ক দেখা যায়। দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের সংগঠন অভিযোগ করে, তাদের এক ছাত্রের ভোট দেওয়া নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় সেই সংগঠন। এর জেরে বেশ কিছুক্ষণ ভোট গণনা বন্ধ থাকে। কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে বৈঠক করে। সমস্যা মেটার পর ফের গণনা শুরু হয়। এই ফ্যাকাল্টির ছাত্র সংসদ দখল করা নিয়ে ডিএসএ এবং এসএফআইয়ের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। ক্লাস ভিত্তিক ফলাফল বেরতে শুরু করলে দেখা যায়, এসএফআইয়ের ব্যবধান ধীরে ধীরে বাড়ছে। অন্যদিকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিএসএফ প্রথম থেকেই লিড নিয়েছিল। আর্টস ফ্যাকাল্টির বেশ কিছু বিভাগে এসএফআইয়ের ভোট এবিভিপি পেয়েছে, এমন অভিযোগও উঠতে শুরু করে। এক ছাত্র বলেন, কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যেখানে এসএফআইয়ের দশটা ভোট কম, এবিভিপির সেখানে দশটা ভোট বেশি। তাহলে কি বামের ভোট রামে গিয়ে পড়েছে? এই ফ্যাকাল্টিতে কিছুটা মুখ রক্ষা হয়েছে টিএমসিপির। কারণ তারা এবিভিপি চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে।
এবার বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ফলাফলে আসা যাক। সায়েন্সে চারটি কেন্দ্রীয় পদে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ডব্লুটিআই। চেয়ারপার্সন (সিপি) এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে হাজারের বেশি ভোট পেয়েছে ডব্লুটিআইয়ের প্রার্থীরা। এসএফআই দ্বিতীয় হয়েছে। তারা ২০০র বেশি ভোট পেয়েছে। ২০১৭ সালে যে শেষ ভোট হয়েছিল, তাতে এই দু’টি পদে যথাক্রমে ৭২ এবং ৭৭টি ভোট পেয়েছিল বামেরা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিএসএফ সিপি, জিএস এবং এজিএস (দিবা) পদে দু’হাজারের বেশি ভোট পেয়েছে। এই তিনটিতেই দ্বিতীয় স্থানে এবিভিপি। তিনটি পদে তাদের প্রাপ্ত ভোট যথাক্রমে ৫০৮, ৫২৩ এবং ৩৭৬। এই ছাত্র সংসদের ভোটে নোটা এবং টিএমসিপি প্রায় সমান সমান ভোট পেয়েছে।
টিএমসিপির সঞ্জীব প্রামাণিক বলেন, আমরা সায়েন্স ফ্যাকাল্টির নির্বাচনে প্রার্থী দিইনি। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বেশ কিছু ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে জিতেছি। এটা আমাদের কাছে ইতিবাচক। অন্যদিকে, এবিভিপির পক্ষে নিখিল দাস বলেন, যাদবপুর বরাবরই বামেদের দুর্গ বলে পরিচিত। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এবিভিপি ঢুকতে পেরেছে এটাই বড় ব্যাপার। তবে এবিভিপির এই উত্থানকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ডিএসএফ। তাদের দাবি, গতবার নির্দল হয়ে যা ভোট পেয়েছিল তারা, এবার সরাসরি লড়ে এবিভিপির ভোট কমেছে। এদিকে, ফলাফল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রছাত্রীরা অকাল হোলিতে মেতে ওঠেন। এই ফ্যাকাল্টিতে টিএমসিপির তুলনায় ভালো ফল করলেও, উচ্ছ্বাসহীন হয়ে রইল এবিভিপি।