গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
টিটাগড় থেকে কাঁচরাপাড়া— এই আটটি পুরসভা নিয়ে বারাকপুর কর্পোরেশন গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। আট পুরসভার সঙ্গে কাউগাছি-১ ও ২, মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতও অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা। গত নভেম্বর মাসে বারাকপুর মহকুমাশাসক কর্পোরেশন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিটি পুরসভার চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়েছিলেন। সবকটি পুরসভা কর্পোরেশন গঠনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরকে বিস্তারিত রিপোর্টও পাঠিয়েছেন। কর্পোরেশন গঠন করা যেতে পারে বলে জেলাশাসকের অভিমত। তবে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার কর্পোরেশন সংক্রান্ত কোনও নোটিফিকেশন জারি করেনি।
তবে এই আটটি পুরসভা ছাড়া জেলার অন্যত্র শাসকদল পুরভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মিটিং-মিছিল করছেন নেতা কর্মীরা। কিন্তু বারাকপুর লোকসভা এলাকায় শাসকদলের নেতারা ঝিমিয়ে আছেন। কারণ তাঁরা দোলাচলে। পুরভোট, নাকি কর্পোরেশন? তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, খুব দ্রুত কর্পোরেশনের নোটিফিকেশন হবে। পুরভোট না হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। যদিও নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, পুরভোটকে সামনে রেখেই আমাদের প্রস্তুতি চলছে। কর্পোরেশন হলে, হবে। তখন কর্পোরেশন ভোটের প্রস্তুতিই নেব আমরা।
প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, কর্পোরেশন গঠনে অনেক সময় লাগবে। বিধানসভায় বিল আনতে হবে। কত জনসংখ্যা ভিত্তিক ওয়ার্ড হবে, আসন পুনর্বিন্যাস- সবই নতুন করে করতে হবে। নোটিফিকেশন হওয়ার পর সময় লাগবে কর্পোরেশন গঠনে। তাই কর্পোরেশন ভোটও চটজলদি হবে না।
এদিকে, কর্পোরেশনের নামে এই এলাকায় পুরভোট আটকানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছে বিজেপি। বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে গত লোকসভায় অর্জুন সিং জয়ী হয়েছেন। এরপর এখানকার বিভিন্ন পুর এলাকায় তৃণমূলের কাউন্সিলাররা বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুরু করেছিলেন। যদিও এখন তাঁরাই ‘ঘর ওয়াপসি’ করছেন। কিন্তু সংগঠন এখনও পুনরুদ্ধার হয়নি। তাছাড়া, ভাটপাড়া, নৈহাটি, জগদ্দলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রায়দিন বোমা, গুলির আওয়াজ। এই মুহূর্তে পুরভোট করলে, রক্তপাতের সম্ভবনাও আছে। তাই শাসকদল ও প্রশাসন পুরভোট নিয়ে আপাতত পিছু হঠতে চাইছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তবে পুরভোটের প্রস্তুতি চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। পুরভোটের কারণেই বারাকপুর জেলা কমিটির সভাপতি পদে রদবদল করা হয়েছে। ফাল্গুনী পাত্রের বদলে আনা হয়েছে বর্ষীয়ান রাজনীতিক উমাশঙ্কর সিংকে। লোকসভার পর থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার বিজেপি। তা ঠিকমত সামাল দিতে পারছিলেন না ফাল্গুনী। দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব যাতে পুরভোটে কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায়, সে কারণে সভাপতি পরিবর্তন। বারাকপুর জেলা কমিটির নয়া সভাপতি উমাশঙ্করবাবু বলেন, পুরভোট হবে তো? ভোট আটকানোর জন্যই কর্পোরেশন গঠনের তৎপরতা।