বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, নির্যাতিতা তরুণী বাঘাযতীনের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা। ওই তরুণীর মা অনেক আগে মারা গিয়েছেন। বাবা বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। যদিও তিনি বর্তমানে বেকার। যে কারণেই তাঁদের পরিবারে আর্থিক সঙ্কট চলছিল। স্বাভাবিকভাবেই চাকরির সন্ধানে ছিলেন নির্যাতিতা ওই তরুণী। তিনি বলেন, আমার সেই অসহায় অবস্থার সুযোগই নিয়েছে ওই দম্পতি। বিষ্ণুপদ যখন ধর্ষণ করছিল, তখন আমাকে বাঁচানোর পরিবর্তে ওর স্ত্রী প্রত্যক্ষভাবে মদত দিচ্ছিল।
রবিবার পাটুলি থানায় দায়ের করা অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, বাঘাযতীনের একটি আশ্রমে তাঁর যাতায়াত ছিল। সেই সূত্রেই স্থানীয় ই-ব্লকের বাসিন্দা এক মহিলার সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। নিজের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা জানিয়ে ওই মহিলার কাছে চাকরি চেয়েছিলেন তিনি। সেই মহিলা তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে এক দম্পতি (মণ্ডল দম্পতি) ভাড়়া থাকেন। দু’জনেই বেলেঘাটার একটি ব্যাগের কারখানায় কাজ করে। ওই দু’জনকে বলে তিনি তরুণীকে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তদন্তকারীদের নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ওই দম্পতির মাধ্যমে বেলেঘাটার ব্যাগের কারখানায় চাকরি পান তিনি। এমাসের শুরু থেকে সেখানে কাজ শুরু করেন দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে। ওই দম্পতির সহযোগিতায় কাজ পাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি ওই দম্পতির সঙ্গে দেখা করতে ই-ব্লকের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
নির্যাতিতার অভিযোগ অনুযায়ী, যখন তিনি ওই দম্পতির ঘরে ঢোকেন, তখন বিষ্ণুপদের স্ত্রী রনিতা সেখানে ছিল না। বিষ্ণুপদ একাই ছিল। অভিযোগ, ঘরে ঢুকে তিনি কিছুক্ষণ বসেন। কয়েক মিনিট পর বিষ্ণুপদ তাঁর শ্লীলতাহানি করে। তরুণী তখন চেঁচিয়ে ওঠেন। অভিযোগ, সেই সময়েই ঘরে ঢোকে রনিতা। কিন্তু রনিতা স্বামীকে বাধা দেওয়ার বদলে উল্টে স্বামীকে সাহায্য করে বলে অভিযোগ। রনিতা তরুণীর মুখ চেপে ধরে ছিল বলে অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন।
নির্যাতিতা পুলিসের কাছে দাবি করেছেন, প্রথমে লজ্জায় এবং ভয়ে তিনি কাউকে কিছু বলতে পারেননি। কয়েকদিন পরে এক আত্মীয়কে ঘটনাটির কথা বলেন। তারপর সেই আত্মীয়ার সাহায্যেই রবিবার রাতে পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার সকালে তাঁর করা অভিযোগের ভিত্তিতে বিষ্ণুপদ এবং রনিতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। পাটুলি থানার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ১১৪ (একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি মিলে একই অপরাধ ঘটানো) এবং ৫০৬ (ভয় দেখানো) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার ওই দম্পতিকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিসি হেফাজতের রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই তরুণীর মেডিক্যাল টেস্ট করানো হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই তরুণীর গোপন জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে পুলিস।