মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। পুরুষদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা সর্বাধিক। অন্যদিকে, মহিলাদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সারের প্রবণতাও বেশি। চিকিৎসকরা জানান, যত দ্রুত এই রোগ ধরা পড়বে, ততই রোগীর নিরাময়ের সম্ভাবনা বাড়ে। কিন্তু দেখা যায়, বহুক্ষেত্রেই এই রোগ ধরতে অনেকটা সময় লেগে যায়। কারণ, বর্তমানে এক্স রে, এন্ডোস্কোপি, বায়োপ্সির মতো পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়। এসব পরীক্ষার জন্য ন্যূনতম ৩ থেকে ৫ দিন সময় লাগে।
এসব সমস্যার কথা মাথায় রেখে কাজ শুরু করেন যাদবপুরের অধ্যাপকরা। পুনের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সেল সায়েন্স থেকে কোষ কিনে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞান বিভাগ। ল্যাবরেটরিতে সেই কোষকে বড় করা হয়। তার জন্য অবশ্য নানা পদ্ধতি ছিল। নির্ধারিত তাপমাত্রায় রেখে তা করতে হয়েছে। কোষ বড় হয়ে যাওয়ার পর সেগুলি এই গবেষণার জন্য ফিজিক্স বিভাগকে দেওয়া হয়। জয়দীপবাবু বলেন, এই কোষগুলি ওই চিপের উপর রাখার পর টক্সিক হয়ে গিয়েছে কি না, তা জানতে একটি পরীক্ষা করা হয়। কোষ টক্সিক হয়ে গেলে, সেটির উপর এই গবেষণা করা সম্ভব ছিল না। পরীক্ষার পর দেখা যায়, সেরকম কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। সব কিছু ঠিকঠাক হওয়ার পর অবশেষে মূল গবেষণা শুরু হয়।
ল্যংমুর-ব্লজেট যন্ত্রের সাহায্যে এই চিপ তৈরি করা হয়। তারপর সারফেস এনহান্সড রামন স্পেকট্রোস্কোপিকে কাজে লাগিয়ে কোষগুলির উপর পরীক্ষা করা হয়। ওই অধ্যাপকের বক্তব্য, সাধারণ এবং ক্যান্সারযুক্ত কোষ এই চিপের উপর রাখা হয়। তারপর ওই সারফেস এনহান্সড রামন স্পেকট্রোস্কোপির মাধ্যমে দু’টি কোষের তফাৎ তুলে ধরা হয়। দেখা যায়, কয়েক সেকেন্ডেই ক্যান্সার নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে। গবেষণা সংক্রান্ত একটি পেপার ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে ‘সেন্সর্স অ্যান্ড অ্যাকচুয়েটর্স বি’ জার্নালে। অধ্যাপকদের মতে, এই পদ্ধতি যদি আগামীদিনে বিভিন্ন ল্যাবরেটরি বা পরীক্ষাকেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়, তাহলে দ্রুত ক্যান্সার রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে। কারণ, যত তাড়াতাড়ি রোগ ধরা পড়বে, তত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে। যা এই রোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। আগামীদিনে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর যদি এই পদ্ধতি গ্রহণ করতে চায়, তার জন্য সহযোগিতা করতে প্রস্তুত জয়দীপবাবুরা।