পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
অভিভাবকদের অভিযোগ এবং দুর্ঘটনা পরবর্তী পর্বে জেলা পুলিস নিজেও সুয়োমোটো তদন্ত শুরু করেছে। শনিবার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল পোলবার কামদেবপুরে যাওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি খতিয়ে দেখে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চালক নিতাই দাস কল্যাণী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি একটু সুস্থ হলেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য সামনে আসবে বলেই পুলিস মনে করছে।
এদিকে, গাড়ি বদল নিয়ে অভিভাবক মহল থেকেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুক্রবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির সওয়ারি দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীর মা ডলি পাল বলেন, যে গাড়িটি আমাদের কাছ থেকে বাচ্চাদের নিয়ে যায় তা ভালোই গাড়ি। সেই গাড়ি পরিবর্তন করে যদি খারাপ গাড়ি দেওয়া হয় তা দুর্ভাগ্যের। এরই মর্মান্তিক পরিণতি তিনটি নিষ্পাপ শিশু ভোগ করছে, এটা খুবই আক্ষেপের। কলকাতায় চিকিৎসাধীন ঋষভের বাবার পারিবারিক বন্ধু প্রবীণ সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, গাড়ি বদলের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। ওই ঘটনার জেরেই যদি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে প্রশাসনকে বলব কড়া পদক্ষেপ করা হোক। শিশুদের যত্নের বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার ছিল।
হুগলির জেলা (গ্রামীণ) পুলিস সুপার তথাগত বসু বলেন, নির্দিষ্টভাবে আমরা তদন্ত করছি। ফরেনসিক দলও সরজমিন তদন্ত করে গিয়েছে। কী কী ত্রুটি হয়েছিল তা দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দিল্লি রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কে গাড়ির স্বাস্থ্যপরীক্ষা ছাড়াই গাড়ি কীভাবে চলত তা নিয়ে অবশ্য এখনই পুলিস কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি। তবে জখম চালক নিতাই দাস শুক্রবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দাবি করেছিলেন যে, গাড়ির সমস্ত নথিই সঠিক আছে। যদিও শনিবার পর্যন্ত তার প্রমাণ মেলেনি।
শুক্রবার ছাত্র বোঝাই পুলকার পোলবার কামদেবপুরের কাছে উল্টে যাওয়া এবং তাতে তিন খুদে পড়ুয়ার গুরুতর জখম হওয়ার পর থেকেই পুলকার নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন ও স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ওই খুদে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য নিয়ে নজরদারি শুরু করার পরেও পুলিস মহলের তৎপরতা আরও বেড়েছে। শুক্রবারই রাজ্যের আইজি (ট্রাফিক) তন্ময় রায়চৌধুরী ঘটনার তদন্ত করে যাওয়ার পরে শনিবার ফরেনসিক দল তদন্তে আসে। এরই মাঝে বিভিন্ন সূত্র থেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি ও তার চালকদের নিয়ে একাধিক প্রশ্ন সামনে আসছে।
জানা গিয়েছে, শ্রীরামপুর থেকে শামিম আখতার নামে এক চালক গাড়িতে করে গুটিকয় বাচ্চা নিয়ে শেওড়াফুলিতে আসতেন। সেখান থেকে আরও কয়েকটি বাচ্চাকে নিয়ে এসে একসঙ্গে ১২টি বাচ্চা নিয়ে স্কুলে যেতেন নিতাই দাস। গাড়িটিও বদলে যেত। এই বদলে যাওয়া গাড়িটিই শুক্রবার একটি লরির আচমকা বাঁক নেওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। সেই গাড়ির হাল যে মোটেই ভালো ছিল না তা দুর্ঘটনার পর প্রকাশ্যে আসছে। এমনকী গাড়িটির পুরনো মালিকের কাছ থেকে যাঁরা গাড়িটি কিনেছিলেন কাগজপত্র পরিবর্তনের কাজটুকুও না করে গাড়িটিকে ব্যবসা করতে নামিয়ে দেন।