পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
হরিপদ বিশ্বাস নিউ বারাকপুর শহরের পত্তন করেন। ওপার বাংলা থেকে উদ্বাস্তুদের বসবাসের জন্য জমি, চাষের জন্য বলদ দিয়েছিলেন। রেল স্টেশন থেকে তিন তিনটি কলেজ, ১০টির বেশি স্কুল স্থাপন তাঁরই প্রচেষ্টায়। ধীরে ধীরে শহর পূর্ণাঙ্গ নগরীতে পরিণত হয়েছে। এখানে বসবাসকারী ৯৫ শতাংশ ওপার বাংলা থেকে আগত। তার মধ্যে সিংহভাগ মতুয়া মতাবলম্বী। ফলে মতুয়া ভোটই ফ্যাক্টর প্রতিটি নির্বাচনে। গত ১০ বছর ধরে নিউ বারাকপুর পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছে শাসক দল। বাসিন্দারা বলছেন, একটা সময় এই শহরে বোমা, গুলির শব্দ নিত্যদিনের ঘটনা ছিল। খুনখারাবি লেগে থাকত হামেশাই। এখন সেটা অতীত। রাত একটাতেও মধ্যমগ্রাম স্টেশন থেকে একা একা হেঁটে শহরে ঢুকতে পারেন। বারাকপুর কমিশনারেটের মধ্যে একমাত্র নিউ বারাকপুর থানা শান্তিপ্রবণ বলে এখন চিহ্নিত।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই গেরুয়া শিবিরের সংগঠন বাড়তে থাকে নিউ বারাকপুরে। লোকসভা ভোটে ১১০০ ভোটে পিছিয়ে ছিল শাসক দল। ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে তৃণমূল ও ৯টিতে বিজেপি লিড নেয়। তৃণমূল নেতারা স্বীকার করে নিচ্ছেন, গত লোকসভায় মতুয়া ভোট মোদির দিকে ঝুঁকেছিল। আর সিপিএমের ভোট চলে গিয়েছিল বিজেপিতে। এই জোড়া ফলায় নিউ বারাকপুরে ধরাশায়ী হয়েছিল ঘাসফুল শিবির।
পুরভোটের আগে মতুয়াদের ভোট অনেকটাই পুনরুদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করছেন তৃণমূল নেতারা। এনআরসিকে অস্ত্র করে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন দেড় ঘণ্টা করে সময় দিচ্ছেন কাউন্সিলাররা। বাড়ি বাড়ি লিফলেট নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। আর সিপিএম ভোট? প্রশ্ন শুনে বিড়িতে টান দিলেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রবীর সাহা। তিনি বললেন, ওদের জায়গা ছেড়ে দিয়েছি। মিটিং মিছিল করছে। কোথাও কোনও বাধা দিচ্ছি না। ওদের রাজ্য নেতারা এসে সভা করে যাচ্ছেন। ওরাও তো এনআরসি, সিএএ’এর বিপক্ষে। এবার ২০-০ রেজাল্ট, মিলিয়ে নেবেন।
পুরভোটের ঘুঁটি সাজাচ্ছে গেরুয়া শিবিরও। অন্যান্য পুরসভার ন্যায়, এখানেও তাদের ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ সিএএ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সপক্ষে ৯টি বড় সভা হয়েছে নিউ বারাকপুর শহরে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে ছোট ছোট পথ সভা করছেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। দলের উত্তর দমদম উত্তর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক তারক বন্দ্যোপাধ্যায় একদা তৃণমূলে ছিলেন। তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। ফলে শাসক দলের ফাঁকফোকর তিনি ভালই জানেন। নির্বাচনী ময়দানে নেমে তারককে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। তারকবাবু লিকার চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, গত লোকসভা নির্বাচনেই তৃণমূল অশনি সঙ্কেত পেয়েছে। পুরভোটে হবে কুপোকাত। কারণ এখানকার সিংহভাগ ওপার বাংলা থেকে আসা। উদ্বাস্তুরা সিএএ’এর পক্ষে। সিএএ ইস্যুই আমাদের ভোট বৈতরণী পার করে দেবে।