গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পুলিস মহলে একটা কথা খুব প্রচলিত, অপরাধী যতই বুদ্ধিমান হোক না কেন, কিছু না কিছু ভুল সে করবেই। বেলেঘাটায় দু’মাসের শিশুকন্যাকে খুনের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। ভরদুপুরে বেলেঘাটা এলাকার সিআইটি রোডের বহুতল থেকে দু’মাসের শিশুকন্যাকে ‘অপহরণ’-এর ঘটনা প্রথম থেকেই বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি তদন্তকারী দলের। তাই ঘটনার পর মা সন্ধ্যা মালোকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দাদের একটি টিম।
এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে গোয়েন্দারা লক্ষ্য করেন, সন্ধ্যাদেবীর কপালে তাজা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতের কারণ জানতে চাইলে, তিনি পুলিসকে বলেন, অপহরণকারী যুবক তাঁকে ধাক্কা দিতেই তিনি মেঝেতে পড়ে সংজ্ঞা হারান। তখনই তাঁর কপাল কেটে গিয়েছে। এরপর গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসা করেন, আপনি তো চশমা পরেছিলেন? তাহলে চশমাটা ভাঙল না কেন? তখন মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায় তাঁর।
সন্ধ্যাদেবীর আঘাতের প্রকৃতি দেখেও সন্দেহ হয় গোয়েন্দাদের। এই ক্ষতস্থান পরীক্ষা করে চিকিৎসক পুলিসকে জানিয়েছেন, এটা ‘সেলফ ইমফ্লেকটেড ইনজুরি’। অর্থাৎ নিজে নিজেকে আঘাত করলে যেমন হয়, তেমন। চিকিৎসকের অভিমত পাওয়ার পর গোয়েন্দারা সন্ধ্যাদেবীকে চেপে ধরেন। তখন তিনি স্বীকার করে নেন, তিনি এই ঘটনাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে নিজেই দেওয়ালে মাথা ঠুকেছেন!
পাশাপাশি, তদন্তে নেমে মা সন্ধ্যা মালোর দেওয়া বর্ণনা অনুসারে গোয়েন্দারা সিঅআইটি রোড সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ তন্নতন্ন করে খোঁজেন। কিন্তু তাতে শিশুকন্যা কোলে কোনও যুবককে দেখা যায়নি। গোটা জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে গোয়েন্দারা লক্ষ্য করেন, নিজের দুধের সন্তান অপহৃত হলে একজন মায়ের চোখেমুখে যে উদ্বেগ-চিন্তা-বিষন্নতা থাকার কথা, তার লেশমাত্র নেই সন্ধ্যা মালোর মুখে। তাই বারবার তদন্তকারী দলের মনে হয়েছে, কী করে একজন মা এতটা নিষ্পৃহ থাকতে পারে! গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণ যে ভুল ছিল না, তা দিনের শেষেই পরিষ্কার।