পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কী হয়েছিল যার জেরে একেবারে এম ফিল কোর্স কো-অর্ডিনেটর সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই অভিযোগ এনেছিলেন গাইড অরূপকুমার দাস? ঘটনার সূত্রপাত ২০১৮ সালের অক্টোবরে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিশ্চিন্দিপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক নস্কর অরূপবাবুর সময় চান থিসিসের সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার জন্য। সেই মতো, লক্ষ্মীপুজোর পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় খুললে নিজের ঘরে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকেন অরূপবাবু। কিন্তু কার্তিক সেদিন যাননি। না আসার কারণও জানাননি। এরপরই অরূপবাবু জানতে পারেন, তাঁর স্বাক্ষরিত থিসিস জমা পড়েছে কো-অর্ডিনেটরের কাছে। একথা জানতে পেরেই ১৫ নভেম্বর তিনি অভিযোগ জানান।
চিঠিতে বলা হয়েছে, অরূপবাবুর অধীনে থাকা এক গবেষকের থেকেই তাঁর স্বাক্ষরিত একটি সাদা কাগজ জোগাড় করেন কার্তিক। সেখানেই শংসাপত্র লিখে জমা দেন। দু’কপি জমা দিতে হয়। কিন্তু আরেকটি না পেয়ে সেটাই ফোটোকপি করে জমা দেন। ঘনিষ্ঠমহলে ক্ষোভ প্রকাশ করে অরূপবাবু বলেন, ওই গবেষক আমার সঙ্গে দেখাই করেননি। এদিকে, থিসিস জমা দিয়ে দিয়েছেন। আমার অধীনে তখন পিএইচডি (এখন প্রাক্তন) করছিলেন এমন এক গবেষককে ভুল বুঝিয়ে সেই স্বাক্ষরিত কাগজটি তিনি জোগাড় করেছিলেন। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেও বিষয়টা কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঝুলিয়ে রেখেছে, তা জানি না। তাঁর অভিযোগ, থিসিসের চূড়ান্ত কপি তো বটেই, নিয়মিত লেখার যে অগ্রগতি, তাও সই করানো হয়নি তাঁর কাছে। এদিকে, এখন বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ওই গবেষক যোগাযোগ করছেন, যাতে তিনি খুবই বিরক্ত।
কার্তিক অবশ্য ঘটনাটি পুরোপুরি অস্বীকার করছেন না। তিনি বলেন, ভুল বোঝাবুঝি একটা হয়েছিল। যেদিন আমার যাওয়ার কথা ছিল, সেদিন ব্যক্তিগত কাজে আটকে পড়ায় আমি উপস্থিত হতে পারিনি। স্যারকেও সেটা জানানো হয়নি। শুনেছিলাম, আমার জন্য তিনি এসে বসেছিলেন। এরপর আমার সঙ্গে তাঁর এক গবেষক যোগাযোগ করে বলেন, স্যার থাকবেন না। তাই তাঁর কাছে অরূপবাবুর স্বাক্ষরিত একটি কাগজ রয়েছে। সেটা যেন তিনি নিয়ে যান। তারপরেই আমি গিয়ে সেটি নিয়ে এসে থিসিস জমা দিই। তার আগে আমার থিসিসের নিয়মিত অগ্রগতি স্যারের কাছ থেকে স্বাক্ষর করানো ছিল। এরপর শুনি, তিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এটা জানার পর আমি তাঁর হাতেপায়ে ধরি, অনেক অনুরোধ করি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। আমি অত্যন্ত গরিব বাড়ির ছেলে। আমার কেরিয়ার ধ্বংস হতে চলেছে। আগে থেকে স্বাক্ষরিত কোনও কাগজও তো কাউকে দিয়ে রাখা নৈতিকভাবে ঠিক নয়। সেটা কিন্তু উনি করেছেন।
এ প্রসঙ্গে অরূপবাবু সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে, ঘনিষ্ঠমহলে তিনি দাবি করেছেন, তাঁকে ফোনে একবার কার্তিক বিষয়টা জানাতে যোগাযোগও করেননি। জরুরিকালীন প্রয়োজনের জন্য সেই কাগজ দেওয়া ছিল। সেটা কার্তিককে দেওয়ার জন্য নয়। আসলে কার্তিক জানতেন যে, তাঁর থিসিসের যে মান, তা একেবারেই অরূপবাবুর ছাড়পত্র পাবে না। তাই এই কৌশল। এদিকে, যে প্রাক্তন গবেষকের কাছ থেকে কার্তিক কাগজটি নেন, তাঁকেও বোর্ড অব ডিসিপ্লিন একাধিকবার সাক্ষী দিতে ডেকেছিল। কিন্তু তিনি উপস্থিত হননি। ফলে, তদন্তও ঝুলে রয়েছে।