গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
গণেশবাবুর ছেলে তাপস মাল বলেন, ২০১৫ সালে মায়ের চিকিৎসার জন্যে টাকা খরচ হয়েছিল। তখনই বাবা নির্মাণকর্মী কল্যাণ প্রকল্পে প্রায় ৬১ হাজার টাকা খরচের হিসাব দিয়ে টাকার জন্যে আবেদন করেছিলেন। দীর্ঘ চার বছর ধরে টাকা না মেলায় আমরা আশা ছেড়ে দিয়ে ছিলাম। সম্প্রতি আমি নিজের নাম নথিভুক্ত করতে গিয়ে দপ্তরের কর্তাদের বিষয়টি জানাই। তারপরেই তাঁরা যেভাবে উদ্যোগ নিয়ে, নিজেরা কলকাতার দপ্তরে গিয়ে খোঁজ করে টাকা পাইয়ে দিলেন তা ভাবাই যায় না। তাও যে আবেদন হারিয়ে গিয়েছিল কোনওভাবে সেই আবেদনের টাকা আমরা পেলাম, এটা বিশ্বাস করতেই পারছিলাম না। কিন্তু, এটাই বাস্তব। বাবা দপ্তরে গিয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এসেছেন।
বিষয়টি নিয়ে জেলার ডেপুটি লেবার কমিশনার অনিন্দিতাদেবী বলেন, সত্যি কথা বলতে আমরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। কিন্তু আবেদনপত্রটি কোনওভাবে হারিয়ে যাওয়ায় বিষয়টি জটিল হয়ে গিয়েছিল। বিভাগীয় কর্মী, অফিসাররা প্রায় নিজ নিজ উদ্যোগে পুরনো ফাইল খুঁজে, ব্যাঙ্কের কাগজ খুঁজে যেভাবে শেষপর্যন্ত সাফল্য এনেছেন সেই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। শ্রমিক কল্যাণের জন্যে হুগলি থেকে কলকাতা পর্যন্ত সকলে নিজেদের বিধিবদ্ধ কাজের বাইরেও কাজ করেছেন, এটা দৃষ্টান্ত। মন্ত্রী তপনবাবু শ্রমদপ্তরের কর্মী-আধিকারিকদের প্রশংসায় ভরিয়ে বলেন, এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কর্মসংস্কৃতি। যেখানে ১০ -৫টা কাজের বাইরে মানবিক উদ্যোগে কাজ হয়। নতুন বাংলায় এই সংস্কৃতিই এনে দিয়েছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী।
শ্রম দপ্তর ও মাল পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে গণেশবাবু টাকার জন্যে আবেদন করার পর কিছুদিন তদ্বির করেছিলেন। কিন্তু একবছরের টাকা না আসায় তিনি হাল ছেড়ে দেন। ইতিমধ্যে শ্রম দপ্তরের অফিস স্থানান্তরিত হয়, শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পের আবেদনের পদ্ধতি বদলে যায়। এরপর আর ওই টাকা না পাওয়াই ভবিতব্য বলে ধরেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের শেষ দিকে তাঁর ছেলে তাপসবাবু শ্রমদপ্তরে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে আসেন। তাঁর কাছ থেকেই পুরনো ঘটনা জানার পর ডেপুটি লেবার কমিশনার গোটা বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন। সমস্ত পুরনো দস্তাবেজ ঘেঁটে দেখা যায় কলকাতার নথিতে ওই আবেদনপত্রটিই নেই। এরপরই বিভাগীয় কর্তারা নানভাবে তদ্বির, তদারক শুরু করেন। শেষপর্যন্ত জানুয়ারি মাসে গণেশবাবুর নামে টাকা বরাদ্দ হয়ে আসে। চারবছর পরে টাকা হাতে পেয়ে বিস্ময় গোপন করেননি ওই প্রৌঢ়। বলেন, এও সম্ভব হবে ভাবতেও পারিনি।