বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
এই মামলাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম দাবি করে আদালতে সওয়াল করেন সরকারি আইনজীবী সুব্রত গুছাইত। ছ’বছরের বিচারপর্বে হেতাল পারেখ হত্যাকাণ্ড থেকে নির্ভয়া কাণ্ডের উদাহরণ দিয়ে বারবার সওয়াল হয়েছে চুঁচুড়া আদালতে। এদিন সরকারি আইনজীবী বলেন, নৃশংসতার প্রকৃতি ও দোষীদের মানসিক বিকারের নিরিখে এই মামলাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে চিহ্নিত করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। বিচারক ওই দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। আর একজনের বিচার চলছে উত্তরপাড়া জুভেনাইল আদালতে। জানা গিয়েছে, আদালতে এদিন বিচারক ওই দু’জনকে বলে দেন যে, এই মামলার সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। মৃতার বাবা চিন্ময় মণ্ডল অবশ্য খুনিদের মৃত্যুদণ্ডেরই দাবি করেছেন। তাঁর আইনজীবী তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস আইনজীবী সেলের সভাপতি মৃন্ময় মজুমদার বলেন, এই ঘটনা নৃশংসতার বিরলতম নজির। সেই নিরিখে সাজাও যাতে দৃষ্টান্তমূলক হয়, সেই আবেদনই আমরা রেখে এসেছি, আবারও রাখব।
২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বলাগড়ের জিরাটের উত্তর গোপালনগরের ১১ বছরের স্কুলছাত্রী গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। দিনকয়েক পরে গঙ্গার ধার থেকে তার দোমড়ানো মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে বলাগড় থানার পুলিস পাশের হাটতলা গ্রামের দুই যুবক গৌরব, কৌশিক ও এক নাবালককে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই এক নৃশংস ও নারকীয় ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। যা সেই সময় বলাগড় তো বটেই হুগলিতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। আদালত ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাতে ওই তিনজন মিলে পড়ে ফেরার পথে নাবালিকাকে অপহরণ করে। স্থানীয় একটি নার্সারির ভেতরে তার যৌন নিগ্রহ করে। রাতেই মেয়ের ফুল ব্যবসায়ী বাবাকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। সেই রাতে একাধিকবার যৌন নির্যাতন চালানোর পরে চিৎকার রুখতে গলা টিপে খুন করে। এরপর মৃতদেহ বস্তায় ভরে নিয়ে যেতে গিয়ে সমস্যা হওয়ায় কোদাল দিয়ে হাড় ভাঙে।
শেষপর্যন্ত গঙ্গার পাড়ে নিয়ে গিয়ে আরও একবার শারীরিক সম্পর্ক করে তারপর দেহ পুঁতে দেয়। নারকীয় ওই ঘটনারই বিচার গত ছ’বছর ধরে চলছিল। এই ঘটনা এতটাই নাড়া দিয়েছিল যে, বিচারপর্বে ওই ছাত্রীর স্কুলের শিক্ষিকা থেকে গ্রামের মানুষরাও আদালতে আসতেন। এমনকী তদন্তকারী অফিসার বর্তমানে জাঙ্গিপাড়া থানার ওসির দায়িত্ব নিয়ে চলে যাওয়ার পরেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে মামলার তথ্য সরবরাহ করে গিয়েছেন। এখন সাজা কী হয় তা জানতেই মুখিয়ে আছে বলাগড়।