বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
শনিবার অধিবেশনের প্রস্তাবপর্বের শুরুতেই বাম কাউন্সিলাররা ওয়াকআউট করেন। সিপিএম কাউন্সিলার মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তীর কথায়, গত পুর অধিবেশনে বামেদের তরফে সিএএ-এনপিআর নিয়ে প্রস্তাব আনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু চেয়ারপার্সন মালা রায় তা খারিজ করে দিয়ে বলেছিলেন, এগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য অধিবেশনের প্ল্যাটফর্ম নয়। কিন্তু এবার তৃণমূলেরই কাউন্সিলার সিএএ-এনপিআর-এনআরসি নিয়ে আলোচনা চাওয়ায়, তাতে সম্মতি দেওয়া হল। পক্ষপাতিত্ব হচ্ছে। বাম দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার বলেন, সরকারি অর্থে শাসকদলের কাউন্সিলাররা যথেচ্ছহারে ব্যয় করছেন। এগুলিরই বিরুদ্ধে এদিন বাম কাউন্সিলাররা মেয়র এবং চেয়ারপার্সনের ঘরের সামনে গিয়েও বিক্ষোভ দেখান। যদিও চেয়ারপার্সন মালা রায় বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে এবং নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণ করা হত। কিন্তু বাম কাউন্সিলাররা সেই সুযোগ নেননি। এদিন বিজেপি, কংগ্রেস ও তৃণমূল সিএএ-এনপিআর নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা করেছে। কিন্তু বামেরা এই আলোচনায় অংশ নিলেন না।
এদিন সিএএ-এনপিআর-এনআরসি নিয়ে প্রস্তাব আনেন কলকাতা পুরসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক রত্না শূর। তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ফলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত এবং উদ্বিগ্ন। এই আইনে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত পাওয়ার জন্য কোন নথি গ্রহণযোগ্য হবে, তা নির্দিষ্টভাবে না জানায় রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, জন্মের সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য নিত্যদিন বহু মানুষ পুর প্রতিনিধির দ্বারস্থ হচ্ছেন। এর অবসান প্রয়োজন বলেই তিনি মনে করেছেন। কংগ্রেস কাউন্সিলার প্রকাশ উপাধ্যায় বলেন, বিজেপি সরকার দেশকে বিভাজিত করে দিচ্ছে। জাতপাত-ধর্ম নিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করা হচেছ। তিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় প্রত্যেককে হাত তুলতে বলেন। তাতে মেয়র ও মেয়র পারিষদ সহ শাসকপক্ষের প্রত্যেকেই হাত তোলেন। এরপরই বিজেপি কাউন্সিলার বিজয় ওঝা বলেন, কংগ্রেস সরকারের আমলে উগ্রপন্থীরা কাশ্মীরী পণ্ডিতদের গুলি করে মেরেছিল। এজন্য কংগ্রেস সরকারই দায়ী। কংগ্রেসের সরকার দেশকে ধীরে ধীরে শেষ করে দিয়েছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন করে বিজেপি সরকার দেশকে বাঁচিয়েছে। প্রত্যেক সরকারের উচিত, তাদের নিজ নিজ রাজ্যে এ আইন লাগু করা। এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই আইন নিয়ে মুসলিমদের এত চিন্তা হচ্ছে কেন? মুসলিমদের তো তাড়াবে বলা হয়নি। শুধু যেসব মুসলিম অন্য দেশ থেকে এদেশে অনুপ্রবেশ করছেন, তাঁদেরই চলে যেতে হবে। এরপরই তৃণমূল কাউন্সিলার অরূপ চক্রবর্তী বলেন, দেশের সর্বত্র বিভাজনের রাজনীতি চলছে। মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব চরম আকার নিয়েছে। কেউ বিরুদ্ধে বললেই বলা হচ্ছে, দেশদ্রোহী। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারটিকে নির্বাচিত করেছে, তাঁদেরকেই বলা হচ্ছে, নাগরিক নন! এই সরকারের তো পদত্যাগ করা উচিত।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম সর্বশেষে বলেন, এরাজ্যে সাম্প্রদায়িক বিভাজন হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতদিন রয়েছেন, ততদিন এখানে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করতে দেওয়া হবে না। সিএএ-এনপিআর নিয়ে যা হচ্ছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। মানুষ এতটাই উদ্বিগ্ন যে, বার্থ সার্টিফিকেটের জন্য বিশাল লাইন পড়ে যাচ্ছে। এটা হচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ভয়ানক সিদ্ধান্তের জন্য। বিজয় ওঝা কাশ্মীরী পণ্ডিত নিয়ে যা বলেছিলেন, তার উত্তরে মেয়র বলেন, কাশ্মীরী পণ্ডিতদের গুলি করে মেরেছিল উগ্রপন্থীরা। সরকার নয়। তিনি রীতিমতো উত্তেজিত স্বরে বলেন, দেশের সীমান্ত নিয়ে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে সাধারণ মানুষকে খুন করে যাচ্ছে। সীমান্ত সামলাতে পারে না। অথচ মানুষকে বিপদ এবং উদ্বেগজনক ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বিজেপি সরকার।