বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
বহুতল নির্মাণ, নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের সিন্ডিকেটের বিভিন্ন ‘রেট চার্ট’ রয়েছে। পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ হলে ১০ লক্ষ টাকা। চারতলা হলে সাত লক্ষ টাকা। তিনতলা হলে পাঁচলক্ষ টাকা। এই ‘তোলা’ না দিলে বহুতল নির্মাণ হয় না ষষ্ঠীতলা, ম্যাকেঞ্জি রোড, গ্রাহাম রোড, গলিঘাট এলাকায়। গলিঘাট এলাকায় জুটমিল সহ বেশ কয়েকটি কারখানা রয়েছে। প্রতি কারখানা থেকেই তোলা ওঠে। একই সঙ্গে কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ থেকে সব কিছুর নিয়ন্ত্রক হতে চায় এই দুই নেতা।
কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগেও এই দুই নেতা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। মাসখানেক আগে কালামউদ্দিনের ছেলের অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল অস্থায়ী কর্মীদের মারধরের। অস্থায়ী কর্মী ইউনিয়নে কে বা কারা থাকবে, তা নিয়েই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। এছাড়া, এলাকায় জুয়া, সাট্টা চালানোর ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। পুলিসের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না। কালামউদ্দিন বা আনোয়ারের ‘অনুমতি’ থাকলে পুলিসও জুয়া, সাট্টা বন্ধ করতে ভয় পায়।
ম্যাকেঞ্জি রোডে পুলিসের ফাঁড়ি রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আইনের শাসন এখানে চলে না। দিনের বেলাতেই পুলিস অলিগলিতে ঢুকতে ভয় পায়। সন্ধ্যার পর পুলিস কার্যত ফাঁড়িবন্দি হয়ে থাকে। ফলে সশস্ত্র অবস্থায় প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা যায় দুষ্কৃতীদের। বহু বাড়িতে বোমা মজুত রয়েছে। পুলিস ফাঁড়ির পিছনেই তৃণমূল কাউন্সিলার কালামউদ্দিনের বাড়ি। গত ৩০ বছর ধরে তিনি কাউন্সিলার রয়েছেন। তিনি এখন বাড়ি থেকে কম বের হন। কিন্তু, তাঁর ছেলেরা আক্ষরিক অর্থেই উত্তরসূরী হয়ে উঠেছেন। ছেলেদের দাপটও কম নয়।
এদিন দুপুরে কালামউদ্দিনের বাড়িতে বসে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেন, আমার ছেলের উপর হামলা হয়েছে। তারপর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। অনোয়ার নামে একজন রাউডি রয়েছে। ও এসব বোমা, গুলি চালিয়েছে। কালামউদ্দিন বলেন, কাউকে মদত দিই না। তোলাবাজির প্রশ্নই নেই। এখানকার মানুষ জানেন। মানুষ আমার পক্ষে রয়েছে।
গান্ধীঘাটে বাড়ি তৃণমূল নেতা আনোয়ার হুসেনের। তিনি একদা কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ২০১০ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। একাধিক মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আনোয়ার বলেন, একাটি খুনের মামলার সাক্ষীদের উপর হামলা চালিয়েছে কালামউদ্দিনের ছেলে। তারপরেই এলাকার লোক ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে। শুক্রবার বিকেল থেকে যা তাণ্ডব চলেছে, বোমা, গুলি, বাড়ি ভাঙচুর, বাইকে আগুন, সব কালামউদ্দিনের লোক করেছে। তোলাবাজিই তার পেশা। ছয় ছটাক জমিতে কেউ পাঁচিল দিলেও ২০ হাজার টাকা তাকে দিয়ে আসতে হয়। আমি কোনও তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত নই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে রাজনীতি করি। প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, কোনও রকম বেআইনি কাজকে দল প্রশ্রয় দেয় না। তোলাবাজি কেউ করে থাকলে পুলিস ব্যবস্থা নেবে।