বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্রাক মালিকদের অভিযোগ, এই ‘গুন্ডা ট্যাক্সে’র নিয়ন্ত্রণ বারিক বিশ্বাসের হাতে। কিন্তু, কে এই বারিক বিশ্বাস? বসিরহাট ১ ব্লকের সংগ্রামপুর শিবহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সংগ্রামপুর গ্রামের বাসিন্দা বারিকবাবু। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম জীবনে লরির খালাসির কাজ করতেন। তারপর থেকে তাঁর আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি দেখলে যে কেউ চমকে যেতে পারেন। কারণ কয়েক বছরের মধ্যেই একাধিক ইটভাটা, বাংলাদেশে সামগ্রী রপ্তানি, বিএড কলেজ, একাধিক ব্যবসার মালিক হওয়া বারিকবাবু বছরে আয়কর দেন সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা! তাঁর বিভিন্ন ব্যবসায় হাজারের বেশি কর্মচারী কাজ করেন। সংগ্রামপুরের বাড়িতে বসে দরাজহস্তে বিপদে পড়া মানুষের হাতে নিয়মিত আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়ে তিনি একাধারে এলাকার ‘মসিহা’ও বটে!
সংগ্রামপুরের বাড়ির ছাদে সুইমিং পুল এলাকার অনেকের কাছেই বিস্ময়। রাতারাতি এই বিপুল সাম্রাজ্যের মালিক কীভাবে হওয়া সম্ভব? সংগ্রামপুর গ্রামের বাসিন্দা, শাসক দলের একাধিক নেতা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের অভিযোগ, ট্রাকের খালাসি থেকেই তাঁর রকেটের গতিতে তার উত্থান হয়। তবে এর জন্য ‘নিন্দুক’রা নানা অপপ্রচার করে বলে বারিকবাবুর অভিযোগ। এই বিষয়ে বারিক বিশ্বাস বলেন, আমি এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি, বিএড কলেজ, ইটভাটা সহ নানান ব্যবসা রয়েছে। সৎপথে ব্যবসা করে আমি আজকে এই জায়গায় এসেছি। আমি বছরে সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি আয়কর দিই। ব্যবসা বোঝার জন্য আমি এক সময় ট্রাকের সঙ্গে ঘুরতাম। আমার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক কারণে আমার নামে এইসব অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি দলের ঊধ্বর্তন নেতৃত্বকে আগেই সমস্ত কিছু জানিয়েছিলাম।
যদিও স্থানীয়দের দাবি,‘গুন্ডা ট্যাক্স’ বাবদ মাসিক প্রায় কোটি টাকার মধু সর্বস্তরেই ছড়িয়ে দেওয়া হয়। রাজনীতির উঁচু থেকে নিচুতলা ও পুলিসের একাংশে পৌঁছে যায় বখরা। কর্পোরেট কায়দায় সকলের পকেটে মাসের নির্দিষ্ট সময়েই পৌঁছে যায় হিস্যা। আর তার বিনিময়েই ঘোজাডাঙায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের জঙ্গলের রাজত্ব চলে বহাল তবিয়তে। আর ওই দুষ্কৃতীদের দাপটে কাঁপে বসিরহাট শহর সহ সীমান্তবর্তী সমস্ত গ্রামে। যাদের বিরুদ্ধে মুখ খুললে কিংবা পুলিসের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে, সিন্ডিকেটের মাথাদের কাছে সেই তথ্য থানা থেকে বের হওয়ার আগেই পৌঁছে যায় বলে অভিযোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বসিরহাটের এক লরি ব্যবসায়ী বলেন, ব্যবসা করে খেতে হয়, সংসার আছে, শহিদ হওয়ার ইচ্ছে নেই। তাই গুন্ডা ট্যাক্সকেই নিয়তি ভেবে ব্যবসা করছি। তাঁকে তো পুজো দিয়েই চলতে হয়।
ফেডারেশন অব ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক সজল ঘোষ বলেন, শুক্রবারও রসিদ দিয়ে গুন্ডা ট্যাক্স আদায় করা হয়েছে। পুলিসের সর্বস্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সকলেই বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তা সত্ত্বেও টাকা তোলা হচ্ছে। আমাদের অনুমান এরসঙ্গে রাজনীতির কারবারিরাও জড়িত। বারিক বিশ্বাসের বৌদি তথা তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য সাফিজা বেগম বলেন, ঘোজাডাঙায় গুন্ডা ট্যাক্স নামে কিছু নেওয়া হয় বলে আমার জানা নেই। আমার দেওরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। ও সমাজসেবী। এলাকার মানুষই ওর সার্টিফিকেট দেবে।