বিএনএ, চুঁচুড়া: তাঁর কোনও পরকীয়া সম্পর্ক নেই। বরং স্বামীই টাকার লোভে পরকীয়া সম্পর্কে যেতে বাধ্য করছিল। নিজের সম্মান বাঁচাতে তাই তিনি দিল্লিতে চলে গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন টিকটক ভিডিওয় জনপ্রিয় চরিত্র থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া চুঁচুড়ার গৃহবধূ। বুধবার রাতে মায়ের কাছে ভিডিও কল করে ওই গৃহবধূ প্রতিমা মণ্ডল তাঁর উপরে পারিবারিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগও তুলেছেন। বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমের কাছেও একই দাবি তিনি করেছেন। টিকটক করে জনপ্রিয় হওয়া গৃহবধূর নিখোঁজ রহস্যের মধ্যেই তাঁর ভিডিও কলে আবির্ভাব ও পালটা অভিযোগকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই গৃহবধূর এও দাবি, তিনি ফিরলেই তাঁকে খুন ও অ্যাসিডে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে তাঁর কাছে টাকা না থাকায় তিনি দিল্লি থেকে ফিরতে পারছেন না। যদিও এইসব যাবতীয় অভিযোগ তাঁর স্বামী প্রসেনজিৎ মণ্ডল অস্বীকার করেছেন।
এদিন সংবাদ মাধ্যমের কাছে ভিডিও কল মারফত কথা বলতে গিয়ে প্রতিমা মণ্ডল বলেন, আমি কোনও ছেলের সঙ্গে কোথাও পালাইনি। আমি দিল্লিতে আমার বান্ধবীর বাড়িতে আছি। আমার স্বামী আমাকে তার বড় দাদার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করছিল। একইভাবে অন্যান্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক করার জন্যে চাপ দিত। আমার টিকটক ভিডিও জনপ্রিয় হওয়াতে শরীর ব্যবহারের জন্যে আরও চাপ বাড়ে। আমাকে মারধর করা, বাড়ির বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা সহ যৌন নির্যাতনও করা হতো। নিজের সম্মান বাঁচাতে আমি দিল্লি চলে গিয়েছিলাম। আমার রোজগারে সংসার চলত। নিজে রোজগার করত না বলেই আমাকে যে কোনও মূল্যে ব্যবহার করে রোজগার করাতে চেয়েছিল। তা হয়নি বলেই আমার চরিত্র কলঙ্কিত করার কাজ আমার স্বামী করেছে। এখন আমাকে খুন করার, অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমার কাছে টাকা নেই বলে আমি দিল্লি থেকে ফিরতে পারছি না।
বুধবারের ভিডিও কলে অভিযোগের পর ওই গৃহবধূর মা রূপা মালাকারের চুঁচুড়া থানায় পালটা অভিযোগ করার কথা থাকলেও রাত পর্যন্ত তিনি তা করেননি। তবে রূপাদেবী মেয়ের অভিযোগের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বলেন, আমার মেয়ে লজ্জায় আমাকে সব কথা বলেনি। তবে ভাসুরের বিষয়টি বলেছিল। পারিবারিক ব্যাপার বাইরে বললে সংসার ভেঙে যাবে, ছোট নাতনিটার কী হবে এসব ভেবে আমি চেপে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু যেভাবে টাকা রোজগারের জন্যে মেয়েকে ব্যবহারের চাপ দিচ্ছিল তাতে মেয়ের কিছু করার ছিল না। আমার জামাইকে আমি সবথেকে বেশি বিশ্বাস করতাম। আমার টাকাপয়সা পর্যন্ত ওই দেখভাল করত। কিন্তু এতবড় সর্বনাশ ও মেয়েটার করতে চেয়েছিল আমি ভাবতেও পারিনি। যদিও প্রতিমার স্বামী প্রসেনজিৎ মণ্ডল বলেন, দুই সংসারের খরচ আমিই চালাতাম। পরিকল্পনা করে আমাকে ফাঁসিয়ে নিজেকে স্বচ্ছ প্রমাণের জন্যে এখন নোংরা অভিযোগ তুলছে।
টিকটক ভিডিও করে নেটিজেন মহলে জনপ্রিয় হওয়া চুঁচুড়ার ভগবতীডাঙার গৃহবধূ প্রতিমা মণ্ডল আচমকা নিরুদ্দেশ হয়ে যান। গত ১৩ জানুয়ারি তাঁর স্বামী প্রসেনজিৎ মণ্ডল ৩ জানুয়ারি থেকে স্ত্রী ও তাঁর সঙ্গী এক যুবকও নিরুদ্দেশ বলে থানায় অভিযোগ করেন। দিল্লিতে একটি র্যা ম্প শো করতে গিয়ে ওই গৃহবধূ নিরুদ্দেশ হয়েছেন বলে দাবি করেন স্বামী। তারপর ১৫ জানুয়ারি রাতে মায়ের কাছে ফোন করে যৌন ও গার্হস্থ্য নির্যাতনের পালটা অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূ। যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে।