নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এনআরসি’র প্রতিবাদে কলকাতার পার্ক সার্কাস ময়দানে যে অবস্থান চলছে, তা চালিয়ে যাবেন বলে সাফ জানালেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার এই আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। যতদিন যাচ্ছে এই আন্দোলন ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে এতে শামিল হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, অবস্থানকারীদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আবির সরকার, রত্না সাহা রায়রা চিৎকার করে বলছেন, রবীন্দ্রনাথ নেতাজির এই বাংলায় এনআরসি হতে দিচ্ছি না, দেব না...। এরপরই গান ধরেন, ‘আমার সোনার বাংলা/আমি তোমায় ভালোবাসি...। গানের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান অনেকে। চলে একের পর এক দেশাত্মবোধক সঙ্গীত। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কয়েকজন তরুণ তরুণী বললেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এখানকার আন্দোলনের ছবি দেখার পর আমরা অবস্থানকারীদের পাশে এসে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত মঙ্গলবার থেকে আমরা পালা করে এখানে আসছি। তবে অবস্থানকারীদের অনেকেই এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২৪ ঘণ্টা আমরা খোলা আকাশের নীচে রয়েছি। অথচ গত ৭ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও তরফেই কোনও সহযোগিতা মেলেনি। আমাদের দাবি ছিল, রাতে অবস্থানকারীদের বিশ্রামের জন্য তাঁবু বা ত্রিপল টাঙানোর অনুমতি দেওয়া হোক। কিন্তু সে বিষয়ে এখনও অনুমতি দেয়নি পুরসভা।
এদিন পার্ক সার্কাসের ওই মাঠে দেখা মিলল প্রচুর পুলিসের। তাঁরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। মাঠের এক ধারে রাখা হয়েছে দু’টি অ্যাম্বুলেন্স। পার্কের চারধারে উড়ছে জাতীয় পতাকা। এছাড়াও রয়েছে এনআরসি বিরোধী বিভিন্ন পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড। মূল গেটের মুখে ঝুলছে এনআরসি বিরোধী ফ্লেক্স। মাঠে দাঁড়িয়েই কথা হচ্ছিল মসিনা খাতুনের সঙ্গে। স্কুল ছুটির পর দুই মেয়েকে নিয়ে সটান চলে এসেছেন এই মাঠে। বললেন, আমার এক মেয়ে সেভেনে পড়ে, অন্যটি ফাইভে। এনআরসি’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এখানে এসেছি। সময় পেলেই আবারও আসব। আয়েশা আজমি নামে এক যুবতীর কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার যা করছে, তা সব সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে, তাই প্রতিবাদ জানাতেই পথে নেমেছি। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, আমাদের আন্দোলন হবে দিল্লির শাহিনবাগের মতো।