উচ্চবিদ্যায় ভালো ফল হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে সুযোগ আসবে। কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
অর্থোপেডিক হাসপাতালে মৃতের বাড়ির লোকেরা বিষয়টি জানার পর তাঁকে চলে যেতে বললেও তিনি রাজি হননি। শঙ্করবাবু বলেন, আমি যখন দেহ গাড়িতে তুলেছি, তখন শ্মশান পর্যন্ত পোঁছে দিয়েই যাব। আমার মতো আপনাদেরও খারাপ সময় এখন। এই সময়ে আপনারা নতুন করে সমস্যায় পড়ুন, চাই না। শেষপর্যন্ত তিনি বাঁধাঘাট শ্মশানে দেহ নামিয়ে বাড়ি ফেরেন। এক সাধারণ মানুষের এমন কর্তব্যনিষ্ঠা এবং মানবিকতাবোধ দেখে ধন্য ধন্য করছেন দু’টি শবযাত্রায় শামিল প্রতিবেশী, পরিজন থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেকের মতে, শঙ্করবাবু এমনই। দিন হোক বা রাত, পাড়ার লোকের সুবিধা-অসুবিধায় তাঁকে পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক বা শীতের রাতের হাড়কাঁপানো ঠান্ডা— কোনও দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কখনও মুখের উপর ‘না’ করে দেন না উনি।
বৃহস্পতিবার সকালের দিকে রেলের হাসপাতালে মারা যান বেলগাছিয়ার বাসিন্দা চিন্ময় রায় (৫৬)। পেসমেকারের কোনও সমস্যায় হৃদযন্ত্রের কাজ বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। চিন্ময়বাবুর দেহ হাসপাতাল থেকে বেলগাছিয়ায় তাঁর বাড়ি ঘুরে বাঁধাঘাট শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তোলেন শঙ্করবাবু। তিনি এদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ যখন চিন্ময়বাবুর দেহ নিয়ে তাঁর বাড়ি পৌঁছন, তখন ফোনে খবর পান, তাঁর মাও গত হয়েছেন। তখন শঙ্করবাবু বলেন, একটু তাড়াতাড়ি করবেন সম্ভব হলে। কারণ আমার মা মারা গিয়েছেন। আমাকে যেতে হবে। তখন অনেকেই তাঁকে বলেন, আপনি তাহলে চলে যান। আমরা না হয় বিকল্প একটা ব্যবস্থা করছি। তখন শঙ্করবাবু তাঁদের বলেন, আমার কাজ আমি শেষ করেই যাব। তাঁর এমন কথায় বিস্মিত হয়ে যান সেখানে উপস্থিত লোকজন। চিন্ময়বাবুর বন্ধু গৌতম ভট্ট বলছিলেন এসব কথা। তিনি আরও বলেন, আমি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করব। এমন মানুষ সমাজের জন্য খুব দরকার।
কী বলছেন শঙ্করবাবু? তিনি বলেন, আমাকে দিনেরাতে এই পরিষেবায় যে পাওয়া যায়, তা এলাকার বা হাসপাতালের অনেকেই জানেন। গত ১০ বছর এই গাড়ি চালাচ্ছি। আগে হিন্দু সৎকার সমিতিতে এই কাজ করতাম। পরে আমাদের এখানে একটি ক্লাবের সহযোগিতায় এই গাড়িটি চালাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, মা গতরাত থেকেই বেশ অসুস্থ ছিলেন। ৭২ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর মা গীতাদেবীর। হোমিওপ্যাথি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।