বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, এদিন বারাসত-হাসনাবাদ শাখার হাড়োয়া রোড ও চম্পাপুকুর স্টেশনের মধ্যে সকাল সাড়ে ছ’টাতেই অবরোধ করা হয়। লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা শাখায় লক্ষ্মীকান্তপুর ও নিশ্চিন্তপুর স্টেশনের মধ্যে ওভারহেড তারে কলার পাতা ফেলা হয়। সকালে শুরু হওয়া ট্রেন অবরোধের ঘটনা দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শাখায় ছড়িয়ে পড়ে। লালগোলা স্টেশনের কাছে কৃষ্ণপুর স্টেশনে খালি ট্রেনে ক্ষুব্ধ জনতা আগুন লাগিয়ে দেয়। নিমতিতা, বাসুদেবপুর হল্ট স্টেশন থেকে জিনিসপত্র বার করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সাঁকরাইল স্টেশনেও আগুন জ্বালিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে রেলকর্মীদের মধ্যে। এদিন পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বহু লোকাল ট্রেন বাতিল ছিল। কেবল দক্ষিণ-পূর্ব রেলেরই সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫০টি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল।
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, নিউ ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ এবং রামপুরহাট-গুমানি শাখায় বিক্ষোভ-অবরোধের জেরে এদিন একগুচ্ছ দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়। তার মধ্যে ছিল আপ তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস, আপ রাধিকাপুর এক্সপ্রেস, আপ হাটেবাজারে এক্সপ্রেস, আপ হাওড়া-কাটিহার এক্সপ্রেস, ডাউন মালদহ-নবদ্বীপধাম এক্সপ্রেস সহ একাধিক ট্রেন। সরাসরি ট্রেন বাতিল করা ছাড়াও একাধিক ট্রেনের যাত্রাপথ কমিয়ে দেওয়া হয়। কিছু ট্রেনের সূচিতে বদল করতে হয়। আজ, রবিবার নবদ্বীপধাম-মালদহ-নবদ্বীপধাম ট্রেন, আপ ও ডাউন তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস, হাওড়া-মালদহ-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, কলকাতা-রাধিকাপুর এক্সপ্রেস, আপ হাটেবাজারে এক্সপ্রেস, কলকাতা গুয়াহাটি গরিব রথ এক্সপ্রেস সহ অন্যান্য ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পূর্ব রেলের এক কর্তা বলেন, শনিবার বহু ট্রেন অবরোধে আটকে পড়েছিল। তার মধ্যে নিউ জলপাইগুড়ি-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেস, কলকাতা-হলদিবাড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, হাওড়া-জয়নগর প্যাসেঞ্জার, ব্যাঙ্গালোর ক্যান্টনমেন্ট-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসকে যাত্রাপথে দীর্ঘ সময় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে রেলের সিনিয়র অফিসাররা কন্ট্রোল রুমে দীর্ঘক্ষণ কাটিয়েছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, এদিন হাওড়া-দীঘা এসি এক্সপ্রেস, হাওড়া-পুনে দুরন্ত এক্সপ্রেস, হাওড়া-তিরুপতি হামসফর এক্সপ্রেস, হাওড়া-সিএসএমটি গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস, হাওড়া-এর্নাকুলাম অন্ত্যোদয় এক্সপ্রেস, আপ-ডাউন কাণ্ডারী এক্সপ্রেস সহ অন্যান্য ট্রেন বাতিল হয়েছে। এদিন অবরোধের জেরে হাওড়া-যশবন্তপুর দুরন্ত, হাওড়া-হায়দরাবাদ ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেস, টাটানগর-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেস, ভুবনেশ্বর-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেস, পুরী-হাওড়া শতাব্দী এক্সপ্রেস সহ একগুচ্ছ ট্রেন বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন শিশু ও বয়স্ক যাত্রীরা। দূরপাল্লার ট্রেনে বহু রোগী চিকিৎসার জন্য সফর করেন। ভোগান্তিতে পড়েন তাঁরাও। যাত্রীদের বক্তব্য, কেউ বেড়ানো বা অফিসের কাজ বা নানা কারণে ট্রেন সফর করেন। সময়ে ট্রেন না চললে প্রত্যেকেরই ‘রুটিন’ তালগোল পাকিয়ে যায়। অনেক সময় দেরিতে পৌঁছনোয় যে উদ্দেশ্যে সফর, তার আর প্রয়োজন থাকে না। পশ্চিমবঙ্গ রেলযাত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অপরেশ ভট্টাচার্য বলেন, দাবিদাওয়া, ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু তার জের রেলের উপর কেন পড়বে? শহরের লাইফ লাইন বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে যে কী ভোগান্তিতে পড়তে হয়, তা ভুক্তোভোগীরাই জানেন। যাত্রীরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে বুঝতে পারছেন না কখন গন্তব্যে পৌঁছবেন। রাজ্য এবং রেল প্রশাসনকে সমন্বয় বজায় রেখে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।