কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বারাসতের পুলিস সুপার সি সুধাকরকে ফোন করা হলে ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন। বসিরহাটের পুলিস সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, সকালে ট্রেন ও কয়েকটি জায়গায় রাস্তা অবরোধ হয়েছিল। দুপুরের মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে কোথাও কোনও সমস্যা নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ৬টা নাগাদ বসিরহাটের কাঁকড়া মীর্জানগর স্টেশন ও শাসনের সন্ডালিয়া স্টেশনে লাগোয়া রেলগেট আটকে বিক্ষোভ শুরু হয়। ট্রেন লাইনের উপর আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করা হয়। ফলে বিভিন্ন স্টেশনে বসিরহাটগামী ও শিয়ালদহগামী ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই লাইনের চাঁপাপুকুর সহ বেশ কয়েকটি স্টেশনে ফের অবরোধ করা হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ থাকায় নিত্যযাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। অন্যদিকে,বিভিন্ন থানা এলাকায় টাকি রোডও দিনভর অবরোধের ফলে বসিরহাট কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত রাস্তা এদিন সকাল থেকে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে এলাকাবাসী। রাস্তার উপর টায়ার ফেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বাংলাদেশগামী পণ্যবাহী গাড়ি পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে থাকে। দেগঙ্গার বেলিয়াঘাটা বাজারে সকাল থেকে টাকি রোড অবরোধ করা হয়। রাস্তায় টায়ার ও গাছের গুড়ি ফেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এখানকার ইছাপুর চৌমাথাতেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবরোধ করেন উত্তেজিত এলাকাবাসী। শাসনের দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে ও গোলাবাড়ি বাজারে টাকি রোড সকাল থেকে অবরোধ করা হয়। রাজারহাট বেলিয়াঘাটা রাস্তা আমিনপুরেও সকাল থেকে অবরোধ করা হয়। দত্তপুকুরের কদম্বগাছি বাজার এলাকায় চার জায়গায় টাকি রোড অবরোধ করা হয়। কদম্বগাছি পুলিস ফাঁড়ি, কদম্বগাছি বাজার, স্টেশন মোড় ও গোয়াখালিতে সকাল থেকে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয় ও বিক্ষোভ মিছিল করে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুতুল দাহ করা হয়। হাসনাবাদের তালপুকুর বাজারে এদিন বিকেলে বাম ও কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এদিন বিকেলে যুব তৃণমূলের নেতৃত্বে দেগঙ্গা কলেজ থেকে বেড়াচাপা বাজার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। অন্যদিকে, সকাল থেকে আমডাঙা থানা এলাকা বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। ৩৪নম্বর জাতীয় সড়কের বিডিও অফিস মোড়, রাহানা, সোনাডাঙা, খেলিয়া, কাচারী, আবালসিদ্ধি, রায়পুর, রফিপুর মোড়, রংমহল এলাকায় সকাল থেকে অবরোধ করা হয়। রাস্তার উপর ট্রাক ও বাসের টায়ার ও রাস্তার দুই দিকের বিভিন্ন গাছের ডালাপালা ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাস্তায় বের হওয়া হাড়োয়ার বাসিন্দা সন্তোষ দত্ত, সজল দাস বলেন, অফিসের কাজে বেরিয়েছিলাম। ট্রেন বন্ধ বলে, বাস ধরে আসার চেষ্টা করি। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধের জেরে বারাসত পৌঁছতে বিকেল হয়ে যায়। ট্রেন বন্ধ থাকায় রাতে হোটেল ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়েছে।
সংসদ সদস্য শান্তনু ঠাকুর বলেন, নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ায় শরণার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে। মানুষ খুশির আনন্দে মাতছেন। এই পরিস্থিতিতে পরিকল্পনামাফিক খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলার সর্বত্র উস্কানি দিচ্ছেন। তার জেরেই সর্বত্র অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। তাঁর পরিকল্পনাতেই শুক্রবার সন্ধ্যায় বারাসতের কাজীপাড়াতে আমার স্ত্রী ও পুত্রের গাড়ি আটক করা হয়। পরিকল্পনা মাফিক তাঁদের গালাগালি ও হেনস্তা করা হয়। সিআইএসএফের জওয়ানদেরও হেনস্তা করা হয়। কোনওমতে জওয়ানরা বন্দুক উঁচিয়ে আমার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, সংসদ সদস্য অভিনয়ে দক্ষ। উনি নিজে নিজের মাথা ফাটিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ দেন। তাঁর চরিত্র জেলাবাসী জানেন। তাঁর স্ত্রীকে কোথাও আটক করার বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া রাস্তায় নামা প্রত্যেক আতঙ্কিত মানুষকে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করার অনুরোধ করা হয়েছে। ভাঙচুর বা রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলা যাবে না।