কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
হঠাৎ নিজের শাশুড়িকে কেন খুন করতে গেলেন ডিম্পল? গোয়েন্দারা তদন্তে যে কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন, তার মধ্যে প্রথমটি হল, ঊর্মিলাদেবীর তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে মনদীপ কুমার জন্ডিসে মারা যান। মনদীপ জীবিত থাকাকালীন, পারিবারিক ব্যবসার লাভের টাকা মনদীপ ও তাঁর ছোট ভাই বলরাজের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ হতো। কিন্তু মনদীপ মারা যাওয়ার পর ডিম্পলকে ওই টাকা থেকে বঞ্চিত করা হয়। ডিম্পলকে সংসার খরচ বাবদ একটা থোক টাকা দেওয়া শুরু হয়।
দ্বিতীয়ত, রিচি রোডে যে ফ্ল্যাটে ডিম্পল দুই মেয়ে গুঞ্জা ও গুড়িয়াকে নিয়ে থাকতেন, সেটি মনদীপ ও বলরাজ দুই ভাইয়ের নামে কেনা। স্বামীর মৃত্যুর পর ডিম্পল এই ফ্ল্যাটটি তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য ঊর্মিলাদেবীকে বলেছিলেন। কারণ বলরাজ মায়ের সঙ্গেই থাকতেন এবং পরিবারের রাশ ছিল ওই বৃদ্ধার হাতেই। কিন্তু তিনি ডিম্পলের আর্জিতে সায় দেননি। পাশাপাশি, মনদীপ ও বলরাজের নামে থাকা ব্যাঙ্কের লকারের অধিকার ডিম্পলকে দেওয়া হয়নি।
তৃতীয়ত, স্বামী মনদীপের মৃত্যুর পর আটত্রিশ বছরের ডিম্পলের সঙ্গে বছর বাইশের সৌরভ পুরীর ফেসবুকে আলাপ হয়। পরে এই আলাপ প্রেমে গড়ায়। ডিম্পলের রিচি রোডের ফ্ল্যাটে থাকতে গিয়ে যা নজর এড়ায়নি শাশুড়ি ঊর্মিলাদেবীর। এই সম্পর্ক নিয়ে তিনি প্রবল আপত্তি জানান।
একদিকে আর্থিক বঞ্চনা, ফ্ল্যাট না পাওয়ার পাশাপাশি প্রেমের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ানোয় শাশুড়ির সঙ্গে এভাবেই ধীরে ধীরে সম্পর্ক বিষিয়ে যায় ডিম্পলের। আর তাই পথের কাঁটা সরাতে নিজের মেয়ে ও প্রেমিক সৌরভকে নিয়ে একমাস আগেই খুনের পরিকল্পনা করেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই বাড়ি ফাঁকা মিলছিল না। বলরাজ বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী হঠাৎ করে পাঞ্জাবে বাপের যাওয়ায় সেই সুযোগ চলে আসে।
কীভাবে খুন করা হল ঊর্মিলাদেবীকে? প্রাথমিক তদন্ত শেষে গোয়েন্দারা এখনও পর্যন্ত যতটুকু তথ্য পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে বলা যায়, পরিকল্পনা মতো নাতনি গুড়িয়া বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ ঊর্মিলাদেবীর রাতের খাওয়ার নিয়ে আসে। কিন্তু সেই খাবারে ঘুমের ওষুধ জাতীয় কিছু মেশানো ছিল। খাওয়ার পর ঊর্মিলাদেবী আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। সেই সুযোগে রাত সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টার মধ্যে ডিম্পলের ‘প্রেমিক’ সৌরভ বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে তাঁকে। এই ঘুমের ওষুধের জন্যই সম্ভবত ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঊর্মিলাদেবীর পেট ফালাফালা করা হলেও, প্রতিবেশীরা টুঁ-শব্দটি পাননি। এই অবৈধ প্রেমের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয়, সৌরভ এতটা নৃশংসভাবে খুন করেন ঊর্মিলাদেবীকে।
কীভাবে কিনারা হল? গোয়েন্দা প্রধানের কথায়, ধৃত দু’জন এবং পলাতক যুবক কেউই পেশাদার অপরাধী নয়। গোয়েন্দা প্রধান নিজে রাত ২টো পর্যন্ত এই জিজ্ঞাসাবাদে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়েন ডিম্পল ও গুড়িয়া। যদিও সূত্রের খবর, খুনের সময় ডিম্পল ও গুড়িয়া উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু সৌরভের মোবাইলের অবস্থান ও অত রাতে ঘন ঘন সৌরভকে ফোন করার ঘটনা কাজ সহজ করে দেয় গোয়েন্দাদের।