বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ খবর পেয়ে পুলিস আসে। আসেন কলকাতা পুলিসের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) মূরলীধর শর্মা। পুলিস কুকুর এনে তল্লাশি চালানো হয়। ময়নাতদন্তের বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও এসে তদন্ত শুরু করেন। মূরলীধর শর্মা বলেন, অত্যন্ত নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। বৃদ্ধার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রায় ২০টি কোপানোর চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। গলা কেটে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর ঘরের আলমারিতে হাত পড়েনি। দু’টি ঘরেরই ড্রয়ারগুলি থেকে জামাকাপড় বের করে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। মৃতদেহে সোনার অলঙ্কারও রয়েছে। মোবাইল ফোনও মিলেছে। বিছানার অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের মনে হয়েছে, আততায়ীকে বাধা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন ঊর্মিলাদেবী। ঘর থেকে কিছু সরানো হয়েছে কি না, তা ঊর্মিলাদেবীর ছোট ছেলে না আসা পর্যন্ত বলা যাবে না বলে জানান ওই পুলিসকর্তা। তাঁর কথায়, খুনের পিছনে লুট বা প্রতিশোধ বা সম্পত্তিগত কারণ, সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গৌতম চন্দ নামে এক প্রতিবেশী জানান, একজন পরিচারিকার পাশাপাশি টালিগঞ্জের রিচি রোড থেকে এসে ঊর্মিলাদেবীর দেখভাল করে যেতেন তাঁর বড় বউমা ও নাতি-নাতনিরা। বৃদ্ধা মাঝেমধ্যে বড় বউমার কাছে গিয়ে থাকতেন। বুধবার রাতেও বড় ছেলের বড় মেয়ে খাবার খাইয়ে দিয়ে গিয়েছেন তাঁকে। তাঁর বড় ছেলে বছর সাত-আট আগে মারা গিয়েছেন। মেজো ছেলে থাকেন শিলিগুড়িতে। ছোট ছেলে সপরিবারে এখানেই ঊর্মিলাদেবীর সঙ্গে থাকতেন। গত সোমবার পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য তাঁরা শিলিগুড়ি যান। আজ, শুক্রবার তাঁদের ফিরে আসার কথা ছিল। ইন্টিরিয়র ডেকরেটর্সের পাশাপাশি ব্যবসা রয়েছে এই পরিবারের। টালিগঞ্জের চণ্ডীতলাতে নিজস্ব প্ল্যান্টও রয়েছে তাঁদের।
কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা প্রধান বলেন, তদন্তে জানা গিয়েছে, বাড়িওয়ালারা সেদিন রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ দরজা বন্ধ করার আওয়াজ পেয়েছিলেন। ভোর চারটে নাগাদ উল্টোদিকের বাড়ির এক মহিলা বৃদ্ধার ঘরে আলো জ্বলতে দেখেন। তিনি বলেন, ওই বৃদ্ধা দেরি করেই ঘুমোতেন। তাই আমরা মনে করছি, গোটা ঘটনাটি সাড়ে ১২টা থেকে দু’টো-আড়াইটের মধ্যেই হয়েছে। তিনি এও বলেন, বাড়িতে প্রবেশের কোনও দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল না। তবে বৃদ্ধা ঘর বন্ধ করে ঘুমতেন কি না, তা ছোট ছেলের সঙ্গে কথা বললেই জানা যাবে। তদন্তকারীদের কথায়, স্থানীয় এক যুবক এই বাড়িতে জল দিয়ে যেত। সে কেন আসেনি এদিন, তাও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।