বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদুড়িয়া থানার উত্তর দিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা অসিতবরণ মণ্ডল (৭০)। বাদুড়িয়া বিডিও অফিসের প্রাক্তন কর্মী ছিলেন অসিতবাবু। দুই ছেলের মধ্যে বড় অমলেন্দুবিকাশ মণ্ডলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে আগেই। ছোট ছেলে কৃষ্ণেন্দু বারাসতের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী। দক্ষিণ গড়িয়ার কালিকাপুরের বাসিন্দা মনিকা সাহার সঙ্গে বিয়ে অনেক আগে থেকেই ঠিক ছিল কৃষ্ণেন্দুর। আগে দুই পরিবারের উপস্থিতিতে রেজিস্ট্রি ম্যারেজও হয়ে যায়। দুই পরিবার বসে আগামী ১১ ডিসেম্বর অর্থাৎ বুধবার বিয়ের দিন স্থির করে।
সম্পন্ন পরিবারের কর্তা অসিতবাবু ছোট ছেলের বিয়ের জন্য কোনও কার্পণ্য রাখতে চাননি। প্যান্ডেল তৈরির পাশাপাশি সারা বাড়ি সাজিয়ে তোলা ও বিয়ের বাড়ির জন্য সমস্ত আয়োজন বেশ কিছুদিন আগেই সেরে ফেলেছিলেন। রবিবার থেকেই বাড়িতে আত্মীয়দের ঢল নামতে শুরু করে। সোমবার বিয়েবাড়ির খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি আত্মীয়দের সঙ্গে মজা ও ঠাট্টায় মেতে উঠেছিলেন মণ্ডল দম্পতি। সোমবার সন্ধ্যায় সবার সঙ্গে কথা বলার সময় আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন অসিতবাবু। দ্রুত স্থানীয় চিকিৎসককে ডেকে চিকিৎসা করানো হয়। এরপর মঙ্গলবার সকালে আচমকা তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
এই খবর কার্যত বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো নেমে আসে মণ্ডল পরিবারের উপর। হবু শ্বশুরের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সমস্ত লৌকিকতা ছেড়ে বাবা জয়ন্তকুমার সাহা ও মায়ের সঙ্গে কৃষ্ণেন্দুর বাড়িতে দৌড়ে আসেন কনে মনিকাদেবীও। সবাই যখন সৎকারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে, তখন অলিরানিদেবী সকলের কাছে নতুন প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, স্বামী বেঁচে থাকলে তিনি যত অসুস্থ হোন না কেন, এই বিয়ে বন্ধ হোক চাইতেন না। আজ তাঁর সৎকার হলে বিয়ে এক বছর পিছিয়ে যাবে। তাই ওনার সামনেই আমি ছেলের বিয়ে দিতে চাই। এরপর বর ও কনেপক্ষ বসে আজ, বুধবার সকাল ১০টায় নিয়ম মেনে বিয়ের সিদ্ধান্তে রাজি হয়। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত শববাহী গাড়িতেই রাখা হয়েছে অসিতবাবুর মৃতদেহ।
কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, আচমকা উনি এই সিদ্ধান্ত জানাবেন আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি। মায়ের এই সিদ্ধান্ত আমরাও সকলে মেনে নিয়েছি। আমার বাড়িতে সকল আত্মীয়দের মতো আমার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সকলে এসেছেন। বুধবারই বিয়ে হবে। বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা মৃত অসিতবাবুর জেঠতুতো ভাই অরুণ মণ্ডল বলেন, ভাইপোর বিয়ে শেষের পর আমরা দাদার মৃতদেহ সৎকার করতে নিয়ে যাব।