মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযো ... বিশদ
গত ১৮ নভেম্বর পুরকর নির্ধারণ দপ্তরে সিএজির পাঠানোর তথ্যে দেখা গিয়েছে, ২০১৭-১৮ সালে বহু নাগরিকের আবেদনের ভিত্তিতে সুদ ও জরিমানা ছাড় দিয়েছে পুর প্রশাসন। সেই তালিকায় রয়েছে একাধিক রিয়েল এস্টেট এবং বহুজাতিক সংস্থাও। যারা বছরের পর বছর সম্পত্তি কর বকেয়া রেখে দিয়েছে। তারপর পুরসভার ছাড়ের সুযোগে জরিমানায় ৯৯.৯৯ শতাংশ ছাড় নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার অডিটররা রিপোর্টে দেখিয়েছেন, ২৬টি সংস্থার সম্পত্তি কর বকেয়া রাখায় জরিমানা হয়েছিল ১৩ কোটি ২২ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭৮৪ টাকা। মকুব হয়েছে ১৩ কোটি ৯ লক্ষ ৪৪ হাজার ১১৫ টাকা। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে কেন এত ছাড় দেওয়া হল বা কেন বকেয়া আদায়ে কড়া পদক্ষেপ করল না পুর প্রশাসন, তা নিয়েই সিএজি প্রশ্ন তুলেছে। পুরসভার কর রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকদের একাংশের কথায়, বর্তমানে অর্থসঙ্কটে পুর কোষাগারের হাল করুণ। খরচ কমাতে সবদিক থেকেই জোর দেওয়া হচ্ছে। অথচ, এত ব্যয়ের কারণ যখন খুঁজে বেড়াচ্ছেন পুরকর্তারা, তখন সিএজি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কীভাবে অর্থ আদায়ের বদলে একশ্রেণীর রিয়েল এস্টেট সংস্থা অথবা প্রোমোটারদের ছাড় দিয়ে নিজেদের ক্ষতি করেছে পুর প্রশাসন। এমন আইন তৈরি হয়েছে যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোটিপতিরাও যথেচ্ছ ছাড় পেয়েছেন।
পুর কমিশনারের দপ্তরে এক শীর্ষকর্তা বলেন, মাসখানেক আগে কেন্দ্রীয় অডিট সংস্থা পুর প্রশাসনকে একটি চিঠি দিয়েছিল। তাতে শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডের যাবতীয় ঠিকুজি জানতে চাওয়া হয়েছে। দু’টি বিষয়ে অনেকগুলি প্রশ্ন ছিল। কোন অ্যাসেসি নম্বর ৫০ শতাংশ ছাড় নিয়েছে, তার মালিক কে, তিনি কবে আবেদন করেছিলেন, কবে সেই আবেদন অনুমোদন বা বাতিল করা হয়েছে, সুদ বাবদ তিনি কত টাকা ছাড় চেয়েছিলেন এবং সেই ছাড় দেওয়ার পিছনে কারণ কী। বকেয়া করের পরিমাণ কত, সুদের পরিমাণ কত, কত টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে, কবে অনুমোদন পেয়েছে, ছাড় দেওয়ার পর কবে বকেয়া কর জমা পড়েছে, কর ছাড়ের পরে বকেয়া করের পরিমাণ কত।
এই বিষয়গুলি নিয়ে তথ্য আদান-প্রদান হয় পুরসভা ও কেন্দ্রীয় অডিট সংস্থার মধ্যে। নভেম্বরে পুর প্রশাসনের কাছে আসা তথ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে ২৬টি সংস্থার নাম, তাদের কত টাকা বকেয়া সম্পত্তি কর ছিল এবং জরিমানা-সুদ ছাড় দেওয়ার পর কত দিতে হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। জরিমানা বাবদ ৯১ লক্ষ, ৪৮ লক্ষ, ১৮ লক্ষ, ১২ লক্ষ, ৩৯ লক্ষ, ২৯ লক্ষ টাকার মতো বড় অঙ্কের টাকা মকুব করে দেওয়া হয়েছে। আবার সুদ বাবদ (৫০ শতাংশ) ৩৫ লক্ষ, ২৩ লক্ষ, ৩১ লক্ষ, ৫৯ লক্ষ, ৪৯ লক্ষ, ২৯ লক্ষের মতো বড় অঙ্কের টাকাও সংস্থাগুলি ছাড় পেয়েছে। পুরকর্তাদের একাংশের কথায়, নিয়মকানুনের দোহাই দিয়ে পুর প্রশাসন অনেক উচ্চবিত্ত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বকেয়া করে ছাড় দিয়েছে। এমনকী, ব্যক্তিগত স্বার্থেও অনেককে এই সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে সিএজি দৃষ্টি আকর্ষণ করায় অস্বস্তিতে পড়েছে পুরসভা।