বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নওসরের বাড়ি বন্দর এলাকার সিগারেট কলে। তাঁর ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা রয়েছে। সেই সুবাদে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় মোর্তাজার। দু’জনেই একই ব্যবসা করায় বন্ধুত্ব জমে ওঠে। ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় নওসরের মোটা অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তিনি ৫০ লক্ষ টাকা ধার চান মোতার্জার কাছে। এই টাকা অভিযুক্ত দিয়েও দেয়। তার অভিযোগ, দেড় বছর আগে টাকা ধার নিলেও তা কিছুতেই ফেরত দিচ্ছিলেন না নওসর। বিভিন্ন অজুহাতে তিনি অভিযুক্তকে ঘোরাচ্ছিলেন। এই নিয়ে আগে দু’-একবার দু’জনের মধ্যে ঝামেলা ও হাতাহাতি হয়। কিন্তু তারপরেও টাকা ফেরত
দেননি নওসর। এরপরই মোর্তাজা নওসরকে খুন করার পরিকল্পনা করে বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় একটি পানশালায় যায় মোর্তাজা ও তার কয়েকজন বন্ধু। সেখানে পার্টি করে। তখনই মোর্তাজা ফোন করে নওসরকে এই পার্টিতে আসতে বলে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সেখানে চলে আসেন নওসর। সকলে মিলে একসঙ্গে অনেক রাত অবধি মদ্যপান করে। এরপর মোর্তাজার গাড়িতে করে নওসর তাঁর বাড়িতে আসে। সঙ্গে আর এক বন্ধুও ছিল। তাদের নিয়ে বাড়িতে কিছুক্ষণ কাটায় নওসর। এরপর তিনি গাড়ি নিয়ে বেরোন। তাতে মোর্তাজা ছাড়া আরও তিনজন ছিল। প্রথমে ঠিক করে দীঘা যাবে। গাড়ি নিয়ে রওনাও দেয়। দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজে ওঠার পর সিদ্ধান্ত বদলে ফের বন্দর এলাকায় গঙ্গার ঘাটে চলে আসে। সেখানে গাড়িতে বসে সকলে মিলে আবার মদ্যপান করে। সেখানে পাওনা টাকা চায় মোর্তাজা। এই নিয়ে নওসরের সঙ্গে তার ঝামেলা বাধে। আচমকাই মোতার্জা রাস্তায় পড়ে থাকা ইট তুলে এনে তাঁর মাথায় আঘাত করে। বারবার আঘাত করায় নওসরের মৃত্যু হয়। এরপর মোর্তাজার তিন সঙ্গী ক্ষুর দিয়ে নওসরের বুক ও পেট চিরে দেয়। রক্তে ভেসে যায় গাড়ি। ওই অবস্থায় তাঁকে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে গাড়ি থেকে নামিয়ে গঙ্গার ঘাটে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সকাল হয়ে যাওয়ায় দেহ বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেনি অভিযুক্তরা। তাড়াহুড়ো করে সামনের দিকে ফেলে দিয়ে আসে। ওই এলাকার বাসস্ট্যান্ডের এক কর্মী দেখেন, এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় জলে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই থানায় খবর দেন। তার আগে এলাকা ছেড়ে পালায় অভিযুক্তরা। তবে বেশিদূর পালাতে পারেনি। পুলিস দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসে। তড়িঘড়ি ওই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এর মাঝে দেহ ভেসে ওঠে। অভিযুক্তদের ছবি দেখানো হয় এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁরা অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেন। এরপর এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে। ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, যে যুবককে খুনের পর গঙ্গায় ভাসানো হয়, তার নাম নওসর। সকলেই একই এলাকার ছেলে। মোর্তাজা জেরায় পুলিসকে জানায়, গোটা পরিকল্পনা তার। পাওনা টাকা না মেলায় সে ও তার তিন বন্ধু মিলে নওসরকে খুন করেছে। মোর্তাজা পুলিসের ইনফর্মার বলে জানা গিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় সে অস্ত্র নিয়ে ধরাও পড়ে।