অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মান্নানের আদি বাড়ি ক্যানিংয়ে। বেশ কিছুদিন হল তিনি নরেন্দ্রপুরে থাকছিলেন। তিনি একটি চিটফান্ড সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। সারদা, রোজভ্যালির মতো অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ টাকা ফেরত দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাজার থেকে টাকা তোলে মান্নানের সংস্থা। মান্নান নিজেও একাধিক আমানতাকারীর কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। তিনিও তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেন, এই কোম্পানিতে টাকা রাখা অত্যন্ত নিরাপদ। ভালো টাকা রিটার্ন পাবেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। বারবার মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু প্রতিবারই তিনি সময় চেয়ে নেন। তারপরেও টাকা না পাওয়ায় প্রতারিতরা সিদ্ধান্ত নেন, আলোচনার জন্য ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে অপহরণ করা হবে। সেইমতো ১ ডিসেম্বর তাঁকে পার্ক সার্কাসে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি বেলা ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ১২টা নাগাদ পার্ক সার্কাসে পৌঁছন। সাড়ে ১২টা নাগাদ মান্নান তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে জানান, সিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছেন। ফিরতে দেরি হবে। এরপর নিজের ফোন থেকে সাড়ে তিনটে নাগাদ স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে পার্ক সার্কাসে। আট লক্ষ টাকা দেওয়া না হলে ছাড়া হবে না। এরপর মান্নানের স্ত্রী ওই এলাকায় আসেন। কিন্তু তাঁকে খুঁজে পাননি। তিনি সোজা বেনিয়াপুকুর থানায় চলে যান। সেখানে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার লিখিত অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে পুলিস ৩৬৪এ ধারায় (মুক্তিপণ চেয়ে অপহরণ) মামলা রুজু করে।
তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পারেন, মান্নানকে অপহরণের পিছনে চিটফান্ড সংস্থার লোকজন এবং কিছু আমানতকারী রয়েছে। সিনিয়রদের কারা পার্ক সার্কাসে রয়েছেন, তাঁদের নাম মান্নান স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন। সেই নামগুলি পুলিসকে জানান তাঁর স্ত্রী। জোগাড় করা হয় তাঁদের মোবাইল নম্বর। পাশাপাশি কোথায় কোথায় তাঁদের ডেরা রয়েছে, সে সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু হয়। বেনিয়াপুকুর থানাকে তদন্তে সহযোগিতা করে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ। সোর্স মারফত জানা যায়, মহম্মদ রহমত নামে এক ব্যক্তি এই ঘটনায় জড়িত। তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বেনিয়াপুকুর এলাকা থেকে। ধৃতের কাছ থেকে ঘটনায় জড়িত আরও চারজনের নাম পাওয়া যায়। এরপর বেনিয়াপুকুর এলাকার কয়েক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে।