বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দেবাঞ্জন পান বলেন, আত্মহত্যা হতাশা প্রকাশের এক ঘৃণ্য মাধ্যম। নিজের জন্য এই পরিণিত বেছে নিলে প্রিয়জনের, ভালোবাসার মানুষদের সকলকেই গভীর কষ্ট দেওয়া হয়। কোনওভাবেই এই রাস্তা অবলম্বন করতে নেই। এতে শুধু মানুষকে যন্ত্রণা দেওয়াই হয়। এই বোধটুকুই আসলে তৈরি হয়নি এইসব ছোটদের। বা হয়তো শুনতে খারাপ লাগবে, তাদের সেইভাবে গড়েপিঠেই তোলা হচ্ছে না। উল্টে তারা অল্প বয়স থেকে সোশ্যাল মিডিয়া, ইন্টারনেট, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের এমন একটি জগতের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, যেগুলির সঙ্গে তাদের এত অল্প বয়সে পরিচয় হওয়ার কথাই নয়।
পাশাপাশি জীবনে হতাশা এলে কীভাবে সামালাতে হয়, কীভাবে তার মোকাবিলা করতে হয়, বাবা-মা ভালোর জন্যই বকেন, তাতে বেশি অভিমান করতে নেই, এইসব জরুরি নীতিশিক্ষাগুলিও হচ্ছে না। উল্টে ছোটরা দেখছে, বড়দের হতাশা প্রকাশের বিভিন্ন উগ্র রাস্তা। কী শিখবে তারা? অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।
বিশিষ্ট মনস্তাত্ত্বিক ডাঃ ও পি সিং বলেন, ছোটদের আত্মহত্যার পিছনে বড়দের দায় কম নয়। একবার বকুনি খেলে বা ব্যর্থ হলে জীবন যে শেষ হয়ে যায় না, এই সারসত্যটা ওদের বোঝানোই হচ্ছে না। জীবনের সহজ-কঠিন সত্যির জায়গাগুলিতে ওরা অত্যন্ত নিরাপদ এবং উপর উপর সত্যির উপর বড় হচ্ছে। যে কারণে একটু কড়া কথা, নির্মম বাস্তবতার সম্মুখীন হলে, তারা মারাত্মক পদক্ষেপ নিয়ে নিচ্ছে অনেক সময়ই। সময় যে সবচেয়ে বড় শিক্ষক, ব্যর্থতার পর সাফল্যও আসে, বকুনির পর ভালোবাসাও পাওয়া যায়— জীবনের এই সহজ সরল সত্যগুলি থেকে তাদের আড়াল করে রাখা হচ্ছে।
বিশিষ্ট মনোবিদ মৌপালি ঘোষসেনচৌধুরী বলেন, এর পিছনে মিডিয়ার ভূমিকাও রয়েছে। হিংস্রতা, ঘৃণা, দ্বেষ— খুব অল্প বয়স থেকে টিভিতে বিভিন্ন সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, সিরিয়ালের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে। কৃত্রিমভাবে টেলি দুনিয়া বা চলচ্চিত্র জগতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে বাইরের জগৎ, তার ভালোমন্দ, প্রতিকূল পরিস্থিতি যোঝার ক্ষমতা তৈরিই হচ্ছে না।