শরীর-স্বাস্থ্যের আকস্মিক অবনতি। বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। ব্যবসায় নতুন সুযোগ ... বিশদ
ত্রাণ ও পুনর্বাসন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যখন সংগ্রামপুরের কর্মতীর্থ ভবনে বৈঠক করছেন, বাইরে তখন কয়েক হাজার দুর্গত মানুষের জমায়েত। বৈঠক শেষ করেই তাঁদের সামনে উপস্থিত হন তিনি। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, আপনারা জানবেন আমরা (মা-মাটি-মানুষ সরকার) যখন আছি, চিন্তা করবেন না। এই বিপদে আপনাদের জন্য যতটা পারব, সাধ্যমতো করব। করতালি আর তাঁর নামে জয়ধ্বনির গর্জন ওঠে জমায়েতে। সবাইকে থামিয়ে মমতা বলেন, এটা করতালি দিয়ে উচ্ছ্বাস জানানোর সময় নয়। সবাই মিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর সময়।
বুলবুলের তাণ্ডবে বসিরহাট মহকুমায় প্রাণ গিয়েছে পাঁচজনের। মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের হাতে এক এক করে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরম মমতায় কারও মাথায় কারও পিঠে হাত বুলিয়ে আশ্বাসবাণী তাঁর— পাশে আছি, সঙ্গে আছি।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরাণ্বিত করার বৈঠকে মমতার গোচরে আসে, কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। অথচ এখনও বিদ্যুৎহীন রয়েছে বহু জনপদ। পড়াশুনায় অসুবিধা হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্তা শান্তনু বসুকে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনার সঙ্গেই শিক্ষা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ— যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন প্রত্যেক পরীক্ষার্থী পরিবারকে একটি করে হ্যারিকেন আর পাঁচ লিটার করে কেরোসিন তেল দিন। জলের তোড়ে যাদের বইখাতা নষ্ট হয়েছে, তাদের তা দেবে শিক্ষা দপ্তর। এরই সঙ্গে দুর্গত পরিবারগুলি যাতে যথাযথভাবে ১২ কেজি চাল, শিশু খাদ্য সহ সরকারি ত্রাণ (জিআর) পায়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তীকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিআর-এর সঙ্গে একটু ডাল আর আলু দাও। কমসে কম ডালভাত আর আলুসিদ্ধ খেতে পারবে সবাই। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্গত এলাকাগুলিতে সব মিলিয়ে ১৫ লক্ষ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। বাড়ি ভেঙেছে পাঁচ লক্ষরও বেশি। মমতা বলেন, বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। যে সব কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে এবং যাঁরা শস্যবিমার আওতায় রয়েছেন, তাঁরা তো ক্ষতিপূরণ পাবেনই। কিন্তু যাঁদের নাম বিমার আওতায় নেই, তাঁদের কীভাবে সাহায্য করা যায়, তা জানিয়ে দু’-তিন দিনের মধ্যে প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বুলবুলের প্রকোপে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ন’জন। নিখোঁজ এখনও সাত।