কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষা মনসাদ্বীপের অতি প্রাচীন মন্দির হল নাগমাতার মন্দির। ঝড়ের দিন শনিবার তার বাৎসরিক পুজোর সূচনা হওয়ার কথা ছিল। তাকে ঘিরে সাতদিন ধরে বিশাল মেলা হয়। কলকাতা থেকে বড় বড় যাত্রা দল আনা হয়। হাজার হাজার মানুষ সেই পুজো দেখতে আসেন। পাঁচমাস আগে থেকে তার প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছিল। পুজো কমিটির সম্পাদক রবীন জানা বলেন, ওইদিন বিকেলে ঝড় সব লণ্ডভন্ড করে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, এত হাহাকারের মধ্যেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ চাইছে একটু স্বস্তি। এজন্য যজ্ঞ করা হল। কয়েকশো মহিলা এসে পুজো দিলেন।
শনিবার বিকেলে বুলবুলের প্রথম দাপট শুরু হয়েছিল সাগরের দক্ষিণ অংশে। হাজারের উপর বাতিস্তম্ভ উপড়ে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। তার জেরে অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা সাগরদ্বীপ। রাস্তার উপর বড় বড় গাছ ও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে যাওয়াতে সাগরদ্বীপের মধ্যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সমস্ত রকম যোগাযোগের থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল সাগরের মানুষ। সব মিলিয়ে প্রাণহীন হয়ে গিয়েছিল গোটা দ্বীপ। মঙ্গলবার সকালে কাকদ্বীপ লট-৮ এসে দেখা গেল, ৪ নম্বর জেটিঘাটে লম্বা লাইন। ভিন রাজ্যের পুণ্যার্থীরা দলে দলে চলে এসেছেন। সেখানে সাগরের মানুষও রয়েছেন। সকলেই যাবেন কপিলমুনির মন্দির দর্শন ও সাগর স্নানে। ভেসেলে ওঠার সময় ভয়ঙ্কর ঠেলাঠেলি। ভিতরে ঠাসাঠাসি ভিড়।
কচুবেড়িয়াতে নামার পর ফের হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। ছ’য়ের ঘেরি থেকে চেমাগুড়ি হয়ে মনসাদ্বীপ যাওয়ার পথে উভয়দিকে নজরে পড়ল বিঘের পর বিঘে জমির পাকা ধান ডুবে রয়েছে। পানের বরোজ লণ্ডভণ্ড। বড় বড় গাছ কোথাও শিকড়সুদ্ধ উপড়ে গিয়েছে। সিভিল ডিফেন্স ও সরকারি লোকজন করাত দিয়ে তা কাটাকাটি করছেন। এর মধ্যে দেখা গেল গোষ্ঠতলা মন্দিরে ত্রিপল ও চাল বিলি করছেন বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেন্দ্রনাথ খাঁড়াসহ আধিকারিকরা। বিধায়ক জানালেন, সব হারানোর যন্ত্রণা অনেক। তারমধ্যেই সাগর ফের ছন্দে ফিরছে। তিনি বলেন, রুদ্রনগর বিডিও অফিস, হাসপাতাল, কপিলমুনির মন্দিরের বিদ্যুতের সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি জায়গা স্বাভাবিক হতে আরও পাঁচ থেকে সাতদিন লেগে যাবে।
এদিন মনসাদ্বীপ রামকৃষ্ণ মিশনে যাওয়ার পথে দেখা গেল রাস্তার উপর গাছ কাটা চলছে। এলাকার বহু বাড়িঘর ভেঙে যাওয়াতে সকলের জন্য দুপুরে খিচুড়ি ও রাতে চিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে। একই চিত্র দেখা গিয়েছে, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে। সম্পাদক নিমাই মহারাজ বলেন, আশ্রম ছাড়াও এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রসাদ বিলি চলছে।