গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
খড়দহের রাস উৎসব ঐতিহ্যবাহী। শ্যামসুন্দর মন্দির, মদনমোহন, গোস্বামী বাড়ি, গোপীনাথ মন্দির, কুঞ্জবাটিতে রাস প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। এক পক্ষ কাল ধরে মেলা বসে। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানকার রাস উৎসব দেখতে আসেন। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীদের আনাগোনা লেগে থাকে। কিন্তু, এবার রাস উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। কারণ দুষ্কৃতী দৌরাত্ম। গত কয়েক মাস ধরে খড়দহ পুরসভার ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চলেছে। দিবালোকে বা সন্ধ্যা নামলেই মোবাইল ছিনতাই, দোকানপাট ভাঙচুর, ইভটিজিং সহ নানান ঘটনা ঘটেছে।
দুর্গা পুজোর সময় নারকেল বাগানের একটি পুজো কমিটির অনুষ্ঠান মঞ্চ ভেঙে দেয় দুষ্কৃতীরা। মহিলাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দিয়ে গিয়েছে পাড়ায় পাড়ায়। খড়দহ থানায় নারকেল বাগানের বাসিন্দারা লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব থামেনি। বরং আরও বেড়েছে। অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা কাঁচা কলোনির বাসিন্দা। এক পাণ্ডার নেতৃত্বে এই দৌরাত্ম চলছে। মূল পাণ্ডাকে পুলিস গ্রেপ্তার করেনি। ওই মূল পাণ্ডাকে শাসক দলেরই একটি অংশ মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এর কারণে পুলিস তাকে ছুঁতে পারছে না। বরং তার দলবল এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর জেরে এবার রাস উৎসবে আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
এর জন্য এলাকার নাগরিকরা একটি শান্তি কমিটি গঠন করেছেন। রবিবার বিকেলে প্রায় ২০০ জন পুরুষ মহিলা এলাকায় একটি শান্তি মিছিল করেন। নাগরিক কমিটির আর্জি, রাস উৎসবে যেন দুষ্কৃতী দৌরাত্ম না থাকে। সন্ধ্যার পরেও যেন বাড়ির মহিলারা রাসে যেতে পারেন। রাত ১১টাতেও যেন সুরক্ষিত অবস্থায় বাড়ি ফিরতে পারেন। ওই নাগরিক শান্তি কমিটির সভাপতি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলার তাপস দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, খড়দহের অন্যতম উৎসব রাস। ভিন জেলা থেকেও এই উৎসবে যোগ দিতে আসেন অনেকে। কিন্তু দুষ্কৃতী দৌরাত্ম সকলকেই ভাবাচ্ছে। আমরা খড়দহ থানা ও বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। তবু দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।
খড়দহ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুকন্ঠ বণিক বলেন, দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে এলাকার মানুষের ঘুম চলে গিয়েছে। প্রায় দিনই চলছে অশান্তির বাতাবরণ। আমাদের দলেরই এক অটো ইউনিয়নের নেতা ওই দুষ্কৃতী পাণ্ডার হাতে মার খেয়েছেন। রাস উৎসব নিয়ে আমাদেরও সংশয় রয়েছে। বাড়ির মহিলারা নিরাপদে উৎসবে যেতে পারবেন কি না তা নিয়ে আমরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছি। বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, প্রতিটি ঘটনায় ধরপাকড় চলে। লিখিত অভিযোগ হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাস উৎসবে পুলিস মোতায়েন থাকবে এলাকায়।