নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
সাগর ব্লকের সমুদ্র উপকূলবর্তী হলেও একেবারে আলাদা দ্বীপ হল ঘোড়ামারা। সেখানে অনেকবার ভাঙন হয়েছে। বহু মানুষ দ্বীপ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তারপরও এখনও ছ’ হাজার মানুষ সেখানে বসবাস করেন বলে সরকারি খাতা-কলমে উল্লেখ রয়েছে। বুলবুলের তাণ্ডব সাগর ব্লকের এই অংশে ভয়ঙ্কর হতে পারে এই আশঙ্কা থেকেই প্রশাসনের কর্তারা সেখানে যান। এদিন সন্ধ্যায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে ঘোড়ামারা দ্বীপ থেকে মহকুমা শাসক বলেন, এখানকার সমুদ্র ঘেঁষা নিচু এলাকায় যেখানে টালি, মাটি ও খড়ের ছাওয়া ঘর রয়েছে। সেই সব এলাকার মহিলা, পুরুষ, শিশুদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত এই দ্বীপের ৫০ টি পরিবারকে সরানো গিয়েছে। আজ, শনিবার পরিস্থিতি দেখে বাকিদের সরানো হবে। তিনি বলেন, ঘোড়ামারাতে তিনটি উদ্ধারকেন্দ্র। সেখানে তিন হাজার মানুষ থাকতে পারবে। এরপর যদি সরাতে হয়, তা হলে তাঁদের ঘোড়ামারা থেকে ভেসেলে সরিয়ে সাগরের নিয়ে যাওয়া হবে। সেইভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিন সাগর ব্লকের ধবলাহাটের সাউঘেরি থেকে ৬০ জন, সুমতিনগরের ২৫ জন, বেগুয়াখালির ২৫ জন ও মৌসুনি দ্বীপ থেকে আরও ২৫টি পরিবারকে সরিয়ে রাতেই উদ্ধার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাগরের কপিলমুনি মন্দির থেকে ৫ নম্বর ঘাটের দিকে যাওয়ার রাস্তায় ঝাউবনের কাছে শুঁটকি মাছের কাজে যুক্ত বেশ কয়েকটি পরিবারকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা জানান, সব মিলিয়ে রাতেই পাঁচ হাজার পরিবারকে বিভিন্ন স্কুল ও উদ্ধারকেন্দ্রে সরিয়ে দেওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, সাগর থেকে কাকদ্বীপ ও মেদিনীপুর যাতায়াতের সমস্ত ফেরি আগামী সোমবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। জরুরি পরিষেবার জন্য সাগর থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত কয়েকটি ভেসেল চালু রাখা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ব্লকের সকলের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সাগরে আগত তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের এদিন হোটেল ও বিভিন্ন আশ্রম ছেড়ে নিরাপদ জায়গাতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদিও বাইরে থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের অনেকে এদিন দুপুরে সাগর ছেড়ে কাকদ্বীপ চলে গিয়েছেন। কাকদ্বীপের বিধায়ক ও সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, সরকারিভাবে সাগর, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, নামখানা ব্লকের উপর ঝড়ের তাণ্ডব বেশি হবে বলে আপাতত খবর এসেছে। এর আগে ফণি-র সময়ে একইভাবে এই এলাকায় ঝড়ের মোকাবিলা করা হয়েছে। তিনি জানান, মহকুমা অফিস ছাড়াও বিডিও অফিসে আলাদা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলাশাসক পি উলগানাথনসহ আধিকারিকদের একটি দল পাথরপ্রতিমায় নজরদারি করবে। সেখানেই তাঁদের থাকতে বলা হয়েছে। ঝড়ের পর কোথাও বিদ্যুৎ ও গাছ পড়ে গেলে দ্রুত তা সরানোর জন্য পূর্ত দপ্তর ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার, তারপোলিন মজুত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বুলবুলের মোকাবিলায় প্রশাসন থেকে সমস্ত বিভাগের আধিকারিকরা প্রস্তুতি নিয়েছেন। অন্যদিকে, সুন্দরবনের ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবার বিভিন্ন জায়গাতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।