বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করার পর ঐন্দ্রিলা শিয়ালদহ লরেটো স্কুলে ভর্তি হলেও পড়াশুনা আর এগয়নি। কিছুদিন কলসেন্টারে চাকরি করেছে। নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করলেও তা ১৫ দিনের বেশি টেকেনি। বাড়িতে পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী বাবা। তাই ভাগ্য ফেরাতে কানাডা যাওয়ার পরিকল্পনা করে সে। কিন্তু তার জন্য ১৯ লক্ষ টাকা দরকার। এই টাকাই সে দিন পনেরো আগে চিকিৎসক মামার কাছে ধার চেয়েছিল। কিন্তু গোয়েন্দাদের দাবি, ‘একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া’, ‘মাদকাসক্ত’ ‘বিপথগামী’ ভাগ্নিকে মামা সেই টাকা দিতে রাজি হননি।
পুলিস জানিয়েছে, সেই রাগেই মামার বাড়িতে লুটপাটের ছক কষে ঐন্দ্রিলা। এমনকী এরজন্য প্রয়োজনে খুন করতেও রাজি ছিল সে। তাই হাতুড়ি নিয়ে হানা দিয়েছিল। গোয়েন্দাদের দাবি, ঐন্দ্রিলাকে এই অপরাধ করতে আগাগোড়া সাহায্য করেছে মুহুরি রূপম সমাদ্দার। রূপমই জেলার দাগি দুষ্কৃতী ভোলার সঙ্গে ঐন্দ্রিলার আলাপ করায়। ঐন্দ্রিলার মনে হয়েছিল, মামার বাড়িতে লুটপাট চালালে ৬০-৭০ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জেনেছেন, বুধবার দুপুরে পূর্ব পরিকল্পনা মতো ঐন্দ্রিলা ও ভোলা রূপমের টালিগঞ্জের বাড়িতে আসে। তারপর তারা তাদের মোবাইল রূপমের কাছে রেখে হাতুড়ি নিয়ে হরিদেবপুরে মামা তথা চিকিৎসক অরূপকুমার দাসের বাড়িতে হানা দেয়। বাড়িতে ঢুকে পরিচারিকা কল্পনার কাছে জল খেতে চায় ঐন্দ্রিলা। কল্পনা জল আনতে রান্নাঘরের দিকে যেতেই তাঁকে পিছন থেকে জাপটে ধরে মাথায় পরপর হাতুড়ির আঘাত করা হয়। চিৎকার করে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন কল্পনা। তাঁর চিৎকার শুনে দোতলা থেকে নেমে আসেন ঐন্দ্রিলার মামাতো বোন শালমলি। তাঁর মাথায়ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়। ভয় পেয়ে সিন্দুকের চাবি দিয়ে দেন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতেই লুটিয়ে পড়েন শালমলি।
ভোলা ও ঐন্দ্রিলার মনে হয়, কল্পনা ও শালমলি দু’জনেই মারা গিয়েছে। এরপর তারা সিন্দুক থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা, প্রায় তিন লক্ষ টাকা দামের সোনার গয়না নিয়ে বেরিয়ে আসে। বাইরে অপেক্ষা করছিল রূপম। রক্তমাখা জামা বদল করতে প্রথমে তারা বাইপাসে মেট্রোপলিস মলে গিয়ে নতুন জামা কেনে। মলের বাথরুমে ঢুকে রক্তমাখা জামা ছেড়ে নতুন জামা পড়ে ঐন্দ্রিলা। রক্তমাখা জামা ও হাতুড়ি গড়িয়ার একটি ভ্যাটে ফেলে দেয় তারা।