কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
অভিষেক মণ্ডল (৩১), নিউটাউনের বিবি ব্লকের বাসিন্দা। বেঙ্গালুরুর একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় গত কয়েকবছর ধরে কর্মরত রয়েছেন। পুজোর সময় ছুটি নিয়ে কলকাতায় বাড়িতে এসেছিলেন। নবমীর দিন বন্ধুদের সঙ্গে সল্টলেকে প্রতিমা দর্শন করবেন এবং তারপরে সল্টলেকেরই এক বন্ধুর বাড়িতে থাকার কথা ছিল তাঁর। অভিষেকবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নবমীর দিন সারারাত প্রতিমা দর্শনের পর দশমীর দিন ভোটে ওই বন্ধুর বাড়ি ঢুকছিলেন দু’জনে। এফ ডি ব্লকের কাছে ব্রডওয়েতে রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন অভিষেক। তারপরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বন্ধুর পরিবার অভিষেকের বাবাকে ফোন করে গোটা ঘটনাটি জানায়। সঙ্গে সঙ্গে অভিষেকের পরিবার হাসপাতালে যায়।
অভিষেকের খুড়তুতো ভাই আনমোল মণ্ডল বলেন, পাঁচদিন হাসপাতালের বিছানায় লড়াই করার পর ১৩ অক্টোবর তাঁর দাদার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় তাঁর দাদার শরীরে সেভাবে কোনও আঘাত না থাকলেও, মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। যদিও সেই আঘাত দুর্ঘটনাজনিত কারণেই হয়েছিল, তা নিয়েও তাঁদের প্রবল সন্দেহ রয়েছে। একইসঙ্গে দুর্ঘটনার পরেও অভিষেকের চশমা, ঘড়ি, মোবাইল কীভাবে অক্ষত থাকল, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে পরিবারের মনে। এমনকী দুর্ঘটনার সময় এবং তখন ঘটনাস্থলে থাকা অভিষেকের বন্ধুর বক্তব্যেও অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। যদিও থানা তাঁদের সঙ্গে তদন্তগত বিষয়ে কোনওরকম আলোচনা বা কথা বলছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। এমনকী বিধাননগর দক্ষিণ থানা বিষয়টিকে দুর্ঘটনা বলে দ্রুত তদন্ত শেষ করতে চাইছে বলেও তিনি দাবি করেন। তাই গোটা ঘটনায় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেই অভিষেকের পরিবারের প্রবল সন্দেহ।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ১১ অক্টোবর তাঁদের পক্ষ থেকে পুলিসের কাছে অভিষেকের দুর্ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে লিখিত বক্তব্যও দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও অভিযুক্ত গাড়ি চালককে তৎক্ষণাৎ গ্রেপ্তার করা হয়নি। এমনকী সেই গাড়িটি ফরেন্সিক পরীক্ষা অন্তত সাত-আটদিন পরে করা হয়েছে বলে আনমোলের দাবি। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং তার জেরে দুর্ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। পুলিস জামিনযোগ্য ধারায় সেই চালকের বিরুদ্ধে পুলিস মামলা রুজু করায়, সে আদালত থেকে সহজেই জামিন পেয়ে যায়। অথচ বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় কারও মৃত্যু হলে জামিন অযোগ্য ধারায় পুলিসের মামলা রুজু করার কথা। তা এখনও হয়নি। এমনকী অভিষেকের সেই বন্ধুও এখন আর শহরে নেই বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হতেই কমিশনারেটের উচ্চ পর্যায় থেকে ঘটনার তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট থানা থেকে চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পরবর্তী তদন্তে কী পাওয়া যাচ্ছে, সেবিষয়েও প্রত্যেকদিন থানাকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে কমিশনারেটের কাছে। যদিও পুলিস সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে যা পাওয়া গিয়েছে এমনকী ফরেন্সিক ও অন্যান্য তথ্যেও যা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দুর্ঘটনাতেই অভিষেকের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে যেহেতু ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হয়েছে, তাই সেই দিকগুলিও খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে থানাকে।