বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বনগাঁর পুলিস সুপার তরুণ হালদার বলেন, কেরল বেড়াতে গিয়ে পথ দুর্ঘটনায় বনগাঁর দুই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। আমরা কেরল পুলিস ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দ্রুত মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা ও জখমদের চিকিৎসার বিষয়েও কথা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁর গোপালনগর থানার খাবড়াপোতা গ্রামে পাঁচ বোনের বাপের বাড়ি। বিবাহসূত্রে বনগাঁর ট্যাংরা গ্রামে শোভাদেবী, মুম্বইতে গীতাদেবী, বনগাঁর প্রতাপগড়ে মিতাদেবী, আন্দামানে কাকলিদেবী ও বনগাঁর খাবড়াপোতা গ্রামে লক্ষ্মীদেবী গ্রামে থাকেন। পাঁচ বোনের মধ্যে গীতাদেবী ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের প্রাক্তন কর্মী ও লক্ষ্মীদেবী আইসিডিএস কর্মী। বাকি তিন বোন গৃহবধূ। ভরা সংসারে নাতি নাতনিদের নিয়ে ব্যস্ততার কারণে বোনেদের মধ্যে তেমন দেখা সাক্ষাৎ হয় না। সাংসারিক চাপ কাটিয়ে বছরে একবার কোথাও না কোথাও বেড়াতে যান এই পাঁচ বোন। অসম থেকে শুরু করে তাঁরা একাধিক জায়গায় আগে বেড়িয়ে এসেছেন।
এবার পুজোর ছুটির পর পাঁচ বোন কেরল বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সেইমতো গত ১৫ তারিখ তিন বোন শালিমার স্টেশন থেকে তিরুবনন্তপুরম ট্রেনে চেপে কেরল যান। কাকলিদেবী আন্দামান থেকে ও গীতাদেবী মুম্বই থেকে বিমানে সরাসরি কেরল পৌঁছন। ১৭ তারিখ পাঁচ বোন একসঙ্গে মিলিত হন। এরপর হোটেল থেকে ১৮ তারিখ সকালে একটি গাড়িতে চেপে তাঁরা এলাকায় ঘুরতে বের হন। ওইদিন দুপুর আড়াইটা নাগাদ শোভাদেবী স্বামী নিত্যগোপাল বিশ্বাসকে ফোন করেন। স্বামীর পাশাপাশি ছেলে মলয় বিশ্বাসের সঙ্গেও কথাও বলেন। এমনকী ছেলের হোয়াটস অ্যাপে ঘোরার ছবিও পাঠান শোভাদেবী। এর কিছু সময় পর আম্বালাপুজা শহরের ৪৭নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের গাড়ি। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় পুলিস তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তিন বোনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুই বোনকে স্থানীয় পুলিস কর্মীরা টি ডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁদের শারীরিক অবস্থায় আশঙ্কাজনক।
শোভাদেবীর ছেলে মলয়বাবু বলেন, প্রত্যেক বছর মা ও চার মাসি কোথাও না কোথাও বেড়াতে যান। এবার একসঙ্গে কেরল বেড়াতে গিয়েছিল। গত ১৮ তারিখ থেকে তাঁদের ঘোরা শুরু হয়। ওই দিন দুপুরে মা ও মাসিদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। সকলে খুবই খুশি মনে ঘুরছিলেন। মা তাঁদের ঘোরার ছবি পাঠান। কিছু সময় পর স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ফোন করে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কথা জানানো হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমরাও হতবাক হয়ে গিয়েছি। কে, কাকে, কীভাবে সান্ত্বনা দেব খুঁজে পাচ্ছি না।