দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন থেকেই নৈহাটিতে জার্সি বদলের হিড়িক পড়ে। পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলাররা গেরুয়া শিবিরে ভিড়তে থাকেন। বিজেপিতে যাওয়া ১৮ জন কাউন্সিলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। ওই দিন পুরসভায় ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। পুরসভা চালাতে পারছেন না বলে চেয়ারম্যান রাজ্য সরকারকে একটি চিঠি দেন। বিজেপিকে আটকাতে ১১ জুন রাজ্য সরকার নৈহাটি পুরসভায় প্রশাসক বসিয়ে দেয়। প্রশাসক বসানো অসাংবিধানিক বলে বিজেপি কলকাতা উচ্চ আদালতে মামলা করে। ওই মামলার রায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর দেয় আদালত। রায়ে রাজ্য সরকার ধাক্কা খায়। অর্থাৎ আদালত জানিয়ে দেয়, প্রশাসক বসানো বেআইনি। চেয়ারম্যানকে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে হবে।
আদালতের রায় আসার আগে গঙ্গায় অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। বিজেপিতে যাওয়া ১৮ জন কাউন্সিলারের মধ্যে ১০ জন ‘ঘর ওয়াপসি’ করেন। পরে আরও একজন তৃণমূলে ফেরেন। পুরসভায় মোট কাউন্সিলারের সংখ্যা ৩১ জন। তৃণমূলের পক্ষে দাঁড়ায় ২৪ জন এবং বিজেপির পক্ষে ৭ জন। আদালতের নির্দেশ মতো বুধবার বারাসতে জেলাশাসক কার্যালয়ে আস্থা ভোটের সভা হয়। এই সভা ঘিরে জেলাশাসক দপ্তরে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছিল। পুলিসে ছয়লাপ ছিল গোটা চত্বর। তবে এদিন তৃণমূলের কাউন্সিলাররা সভায় হাজির থাকলেও বিজেপির একজন কাউন্সিলারও আসেননি। পুলিসের তরফে বিজেপি কাউন্সিলারদের বাড়িতে বাড়িতে গাড়িও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, কেউ আসেননি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়ের পক্ষে উপস্থিত ২৪ জন কাউন্সিলারই ছিলেন। ফলে ভোটাভুটি হয়নি। পাঁচ মাস পর নৈহাটির পুরসভার চেয়ারম্যান পদে ফিরলেন অশোকবাবু। যদিও বিজেপির আরও চারজন কাউন্সিলার ‘ঘর ওয়াপসি’ করবেন বলে দাবি করলেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। তিনি বলেন, ২৪ জন কাউন্সিলার আমাদের পক্ষে। ফলে পুনর্দখল হল নৈহাটি। যাঁরা বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা ভুল বুঝতে পেরে ঘরে ফিরেছেন। আরও চারজন কাউন্সিলর পা বাড়িয়ে আছেন। তাঁরাও দ্রুত ফিরবেন। চেয়ারম্যান অশোকবাবু বলেন, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর পরেই পুরসভায় তাণ্ডব চালিয়েছিল বিজেপি। পরে রাজ্য সরকার প্রশাসক বসায়। স্বাস্থ্য পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটছিল। মাতৃসদনের একাধিক বিভাগ বন্ধ ছিল। এবার ফের নৈহাটিতে উন্নয়নমূলক প্রকল্প গুলিতে গতি আসবে।
বারাকপুরের বিজেপির এমপি অর্জুন সিং বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসারেই আমাদের কাউন্সিলাররা অনাস্থার সভায় উপস্থিত হননি। পাঁচ মাস পরেই ভোট। তখনই নৈহাটির মানুষ কাউন্সিলারদের নির্বাচন করবেন। অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে এসেছিলেন এখানেও লুটেপুটে খাবেন। লুটেপুটে খেতে না পাওয়ার জন্য আবার তাঁরা তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। ওরা থাকলে বিজেপির ভাবমূর্তি নষ্ট হত। তাই তাঁদের তৃণমূলে ফেরার ক্ষেত্রে আটকানো হয়নি।